প্রতি বছর বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে একাধিক র্যাং কিং প্রকাশ করে। একেকটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার র্যাংকিং-এর ক্রাইটেরিয়া বা সূচক থাকে একেক রকম। যে সূচকটি সবাই বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, সেটি হচ্ছে গবেষণা। একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর কী পরিমাণ গবেষণা করে, সেই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে কতোগুলো প্রবন্ধ প্রতিষ্ঠিত বা ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে প্রকাশিত হয়, তা র্যাং কিং-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে কাজ করে।
এটি এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, অনেক র্যাংহকিং-এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার চেয়ে এই পয়েন্টটিকে মার্কস বেশি থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এসব র্যাং কিং-এ বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ঠাঁই হয় না। ঠাঁই হয় না বলতে বুঝাচ্ছি যে, সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা তো বাদই দিলাম, সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম আসে না। কেন?
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড-খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছিল নানা দিকে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরও সুনাম কম ছিল না বা কম নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বর্তমানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নামধাম শোনা যায়। এগুলোর কোনোটিই শেষ পর্যন্ত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় আসতে পারছে না।
দেশ হিসেবে আমরা গরীব, সেটা ঠিক আছে; তারপরও নানা দিক দিয়ে এই দেশের মানুষজন নানাভাবে সেরা তালিকায় উঠে আসছে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট টিম যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা পায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড়রা তার দশভাগের এক ভাগও পায় কিনা সন্দেহ। কিন্তু তারপরও আমাদের সাকিব-আল-হাসান অলরাউন্ডারদের র্যাং কিং-এ শীর্ষে থাকেন দিনের পর দিন।
দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা বাদ দিলাম- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা আছে, তাতে কি তাদের কাছ থেকে সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় থাকাটা আশা করতে পারি না? একই আশাবাদ কি ব্যক্ত করতে পারি না রাজশাহী, চট্টগ্রাম কিংবা জাহাঙ্গীরনগর বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে? আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরাই যখন পৃথিবীর অন্যান্য দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যান, তখন তাঁরা যে পরিমাণ সাফল্য বয়ে আনেন, তাতে পরিষ্কার যে, মেধার দিক দিয়ে আমরা খুব একটা পিছিয়ে নেই।
হয়তো বা অবকাঠামো নানা সুবিধার দিক দিয়ে পিছিয়ে আছি। কিন্তু যদি জগদীশ চন্দ্র বসু কিংবা সত্যেন বোসের গবেষণাকর্মের কথা চিন্তা করি- সে তো বহুকাল আগের কথা- তখনও কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকরা ইউরোপ বা আমেরিকান মানের সুযোগ-সুবিধা পেতেন? পেতেন না। কিন্তু তাঁরা আমাদের যেসব গবেষণাকর্ম উপহার দিয়ে গেছেন, সেগুলোর জন্য আমরা এখনও গর্ববোধ করি।
তার মানে বুঝা গেল, আমাদের মেধার দিক দিয়ে ঘাটতি নেই। যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে আমাদের, তাতে প্রতিকূল অবস্থায় অনেকে কাজ করছেন। তারপরও বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নেই কেন? থাকলেও তালিকার শেষের দিকে কেন থাকে?
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি, এর একটি বড় কারণ হচ্ছে গবেষণার অভাব কিংবা গবেষণা করার মানসিকতার অভাব। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী আসলে? আজকে যদি এই প্রশ্নটি করা হয়, তাহলে অনেকে হয়তো উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা, পরিধি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসর ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কিছুকাল আগেও নানা ধরনের আলোচনা হতো, তর্ক-বিতর্ক কিংবা লেখালেখি হতো। আজকাল কি এগুলো কমে গেছে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী বা কোন কোন ধরনের কাজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে হওয়া উচিত, সে প্রসঙ্গে অনেকের ধারণা পরিষ্কার নয় বলে ব্যক্তিগতভাবে ধারণা করি। সম্ভবত বছর দশেক আগে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট নামের একটি বাম ছাত্রসংগঠন উচ্চশিক্ষার ধারণা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে বেশ কয়েকদিনের একটি ধারাবাহিক সেমিনার করেছিল। এর আগে ছাত্র ইউনিয়নও কিছু কাজ করেছে এসমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে। আজকাল বাম-ছাত্রসংগঠনগুলোর এ ধরনের কাজ চোখে পড়ে না। করলেও অধিকাংশ কাজ ঢাকাকেন্দ্রিক। ডান-ছাত্রসংগঠনগুলো তো করেই না। অথচ তারা যদি এগুলো করতো, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার পরিসর, দর্শন, উদ্দেশ্য ও ব্যপ্তি নিয়ে অনেকের ধারণা পাল্টে যেত।
অনেকে মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পড়াশোনা করে ডিগ্রি নেওয়ার একটা জায়গা। প্রকৃত অর্থে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা এবং সেই কাজটা করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী- উভয়েরই এবং যৌথভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাস করতে হয়, শিক্ষককে ক্লাস করাতে হয়- বিষয়টিকে আমরা অধিকাংশ মানুষই এভাবে দেখি।
কিন্তু যদি চিন্তা করি যে, নতুন নতুন জ্ঞান আবিষ্কার করতে গিয়ে ক্লাস নামক একটা পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পারস্পরিক আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, তাহলে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করার গোটা অর্থটিই পাল্টে যায়। কোনো বিষয়ে গবেষণা করতে গেলে সেই বিষয়ে প্রচুর অধ্যয়ন করতে হয়, নিজের জ্ঞান অন্যের সঙ্গে ঝালাই করে নিতে হয়, শিখতে হয় নানা ধরনের সূক্ষ্ম কলাকৌশল। ক্লাশের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেগুলোর চর্চা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ একতরফাভাবে দেয়া বা নেয়ার জিনিস নয়; কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুধু প্রচলিত জ্ঞান বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
প্রচলিত জ্ঞানকে ভিত্তি করে নতুন নতুন জ্ঞান কিংবা উদ্ভাবনাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ। কিন্তু আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্লাশের আনুষ্ঠানিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে জ্ঞান সৃষ্টির কাজটিকে অবহেলা করে থাকি। উচ্চশিক্ষার আগ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক শিক্ষা আমাদের মধ্যে একটি সাধারণ ভিত্তি তৈরি করে দেয়। উচ্চশিক্ষায় এসে সেই ভিত্তিটাকে অবলম্বন করে পৃথিবীকে নতুন কিছু দেয়ার সময়। পাশাপাশি এ সময়ে গবেষণার নিয়মকানুন বা পদ্ধতিসমূহ শিখে কেউ যেন পরবর্তী সময়ে নিজে থেকে আরও নতুন নতুন জ্ঞান বা তত্ত্ব সৃষ্টি করতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত সেভাবেই শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা। কিন্তু এই কাজটা আমরা কি করতে পারছি? কতোদূর করতে পারছি?
আমরা যদি প্রতিবছর নোবেল বিজয়ী মানুষদের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো, তাঁদের প্রায় সবাই কোনো না কোনো গবেষণার সঙ্গে জড়িত আছেন বা ছিলেন। এবং এঁদের প্রায় সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। কিংবা শিক্ষার্থী অবস্থায় এমন কোনো কাজ করেছিলেন যার সুবাদে অনেকদিন পর নোবেল পুরষ্কার পাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, ইংল্যান্ড কিংবা জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এদিক দিয়ে বহুদূর এগিয়ে আছে। এই উদাহরণ থেকেই পরিষ্কার যে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের গবেষণার মূল্য কতোখানি এবং তা আধুনিক সমাজকে কীভাবে আধুনিকতর অবস্থায় নিয়ে যায়।
আমাদের দেশে যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা হয় খুব কম পরিমাণে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য এই অবস্থা একটু একটু করে পাল্টাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান অবস্থাও মোটেই সন্তোষজনক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রতি বছর গবেষণার জন্য কিছু অর্থ বরাদ্দ রাখছে। সেটি কি যথেষ্ট? বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সমস্ত শিক্ষক গবেষণার প্রতি আগ্রহী, তাঁরা কি গবেষণা করার জন্য পর্যাপ্ত ফান্ড পান? প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে পরিমাণ বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়, তার বড় অংশই খরচ হয় বেতনভাতাদি ও অবকাঠামোগত ব্যায়ের পিছনে। গবেষণার জন্য খুব কম অর্থ থাকে।
উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ কিংবা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মিলে যৌথভাবে গবেষণা করে থাকে। এই সংস্কৃতি বাংলাদেশে অনুপস্থিত। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি দেশের সার্বিক পরিস্থিতির চাইতে ভিন্ন হতে পারে না। যে ধরনের অভাববোধ আমরা দেশে দেখতে পাই, তারই একটা প্রতিফলন বিশ্ববিদ্যালয়-পর্যায়েও আমরা অনুভব করি। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয় কেন, কী উদ্দেশ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন- সবার সঙ্গে সেই ধারণাগুলো আবারও নতুন করে আলোচনা করা জরুরি। জরুরি শিক্ষকদের, গবেষকদের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গবেষণার উদ্দেশ্যে পর্যাপ্ত তহবিল গঠন করা। সরকারের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে।
বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও আজকাল ল্যাবরেটরিভিত্তিক কিংবা সামাজিক গবেষণা করে থাকে। সেগুলোতে যদি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা যায়, তাহলে গবেষণাগুলো যেমন ভিন্নমাত্রা পাবে; তেমনি গবেষণার সফলতার হারও অনেকখানি বাড়বে বলে আশা করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই কনসালটেন্সি কাজ হিসেবে নানা জায়গায় গবেষণার কাজ করেন, কিন্তু সেটি ব্যক্তিগত পর্যায়ের যোগাযোগের মাধ্যমে কিংবা বিচ্ছিন্ন কাজ হিসেবে ঘটে থাকে।
এর সঙ্গে সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার যোগসূত্র থাকে খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণার বিষয়টিকে এমনভাবে জড়িয়ে নিতে হবে যাতে তা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবার জন্যই অপরিহার্য হয়ে উঠে। কোনো শিক্ষার্থী যেন মৌলিক গবেষণার কাজ না করে ডিগ্রি না পায়, কিংবা শিক্ষক যেন মৌলিক গবেষণার কাজ ব্যতীত প্রমোশন না পায় সেই ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করলে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান ও পরিমাণ দুটোই বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উচিত হবে এই বিষয়গুলো নিয়ে নানা ফোরামে আলোচনা করা; নির্দিষ্ট কিছু গবেষণাকে কেন্দ্র করে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যকার সমন্বয় সাধন করা এবং সরকার বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেনদরবার করে গবেষকদের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা।
পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে গবেষণাগুলোর প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়াও জরুরি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে এগুলো নিশ্চিত করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাহ্যিক চাকচিক্যের ওপর নির্ভর করে না, নির্ভর করে গবেষণার ওপর। এই কম আলোচিত বিষয়টি যদি আস্তে আস্তে দেশে একটি মূল আলোচনার বিষয় হয়, সেক্ষেত্রে হয়তো পরিস্থিতি বদলাতে পারে অনেকটাই। যারা শিক্ষার নানা দিক দিয়ে পত্রপত্রিকায় লিখেন, বিভিন্ন সভা-সেমিনারে কথা বলেন- তাঁদেরও উচিত হবে বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণা যাতে অপরিহার্যভাবে জড়িয়ে যায়- সেই সংস্কৃতি নিশ্চিত করা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বাড়ানোর জন্য বাড়তি কোনো পদক্ষেপ না নিলেও চলবে বলে আমি মনে করি।
লেখক পরিচিতি
গৌতম রায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।