সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, দেশের আর্থসামজিক উন্নয়ন এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির হার ৮৭%-এ পৌঁছেছে। অর্থাৎ এখনও ১৩% শিক্ষার্থী যাদের বিদ্যালয়ে আসার কথা তারা বিদ্যালয়ে আসছে না। এই হিসেবে ২৩ লাখ শিক্ষার্থী শিক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আবার যারা ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে, তাদের ৪৮ ভাগই দশম শ্রেণী পর্যন্ত পৌছায় না। দারিদ্র্য এর অন্যতম কারণ। দারিদ্র্য যেহেতু একটি ব্যাপক বিষয়, সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেটা দূর করা সম্ভব। তবে এটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। স্কুলের একজন শিক্ষক কিংবা শ্রেণীশিক্ষক দারিদ্র্য বিমোচন বা দূরীকরণের জন্য ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি হয়তো কোনো অবদান রাখতে পারেন না, তবে পরোক্ষভাবে বিশাল অবদান রাখেন বা রাখতে পারেন। শিক্ষার্থীর পরিবার এবং রাষ্ট্র দারিদ্র্যমুক্ত হলে শিক্ষার্থী ভর্তির হার স্বভাবতই বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু যারা ইতোমধ্যে ভর্তি হয়েছে তাদেরকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখার দায়িত্ব যেমন রাষ্ট্রের, তার চেয়ে বড় দায়িত্ব স্কুল এবং শিক্ষকদের। দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে সেখানে সরাসরি হয়ত শিক্ষকদের তেমন কিছু করার নেই, তবে দারিদ্র্য ছাড়াও শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে। শিক্ষার্থীকে ধরে রাখার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং শ্রেণীশিক্ষক এবং বিষয় শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে।
আমাদের দেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গ্রামে বড় বড় মাঠ আছে, স্কুলের চারপাশে রয়েছে বেশ খালি জায়গা; অথচ এই জায়গাগুলো খালি পড়ে থাকে প্রায় সারা বছরই। এইসব খালি জায়গায় সুন্দর সুন্দর ফুলের বাগান করা যায়। ফুলের বাগান করলে ছাত্রছত্রীদের স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাবে। স্কুলের প্রতি তাদের এক ধরনের অংশীদারিত্ব বাড়বে। স্কুলগৃহ এবং চারপাশ ফুল ও ফল বাগান দিয়ে সাজিয়ে রাখলে সত্যিকার অর্থেই স্কুলকে এক স্বপ্নীল জগত মনে হবে শিক্ষার্থীদের কাছে। এক অজানা আকর্ষণ তাদেরকে স্কুলের দিকে নিয়ে আসবে।
বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিশ্বের বৃহত্তম প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম। এখানকার প্রাথমিক শিক্ষায় ১৬.৪ মিলিয়ন ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে, যাদের বয়স ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। প্রাথমিক শিক্ষায় ৩,৬৫,৯২৫ জন প্রাথমিক শিক্ষক রয়েছেন যাদের মধ্যে প্রায় ৫৩% শিক্ষিকা এবং ২৩% প্রধান শিক্ষিকা। বাংলাদেশে ৮২,২১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। মাদ্রাসাসহ ১০ ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে থাকে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই বিশাল জনগোষ্ঠিকে সত্যিকার অর্থেই শিক্ষিত করে তুলতে হলে সর্বাগ্রে নজর দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষার দিকে। আমাদের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ থেকে ৩ জন শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত। টিআইবির মতে প্রায় ৭৩% রেজিস্টার্ড বেসরকারী শিক্ষক বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ পাননি।
অতিরিক্ত ক্লাসরুমের অভাবে অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করে। অর্থনৈতিক কারণ ছাড়াও এই কারণগুলো ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ের দিকে আকৃষ্ট করে না। তাছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অব্যবস্থাপনায় ভর্তি প্রাথমিক শিক্ষা। পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুর্নীতি বিরাজ করছে এখানে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতি বিরাজ করছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে রয়েছে দুর্নীতি। কবে এবং কিভাবে এগুলো দূর হবে সে নিয়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্ট সবাই। প্রাথমিক শিক্ষার মান তো দূরের কথা সকল ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিয়ে আসা এবং আনার পরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তকালীন সময় পর্যন্ত তাদেরকে স্কুলে ধরে রাখা নিয়ে ভাবতে হবে সবাইকে। শুধু সরকার বা প্রাথমিক শিক্ষার সাথে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দই পারবে না এই দুরূহ কাজটি সম্পন্ন করতে। সকল শ্রেণীর মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নত করতে। শহর অঞ্চলের দরিদ্রদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার উল্লেখযোগ্যহারে কম। শহরের কোথাও কোথাও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির হার গ্রামের চেয়েও কম। এ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে সবাইকে। বাংলাদেশে ২০১৫ সালের মধ্যে ৯৫% শিক্ষার্থীকে স্কুলে ভর্তি করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পিইডিপি-২ প্রোগ্রামের মাধ্যমে। ৪০,০০০ অতিরিক্ত ক্লাসরুম, ৩৯৭ উপজেলায় রিসোর্স সেন্টার, ৩৯৮ স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টার নির্মিত হয় পিইডিপি-২ এর আওতায়। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে আরো উন্নত করার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার গঠনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ দাবি জানানো হচ্ছে। দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পিইডিপি-২তেও প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার গঠনের প্রস্তাব ছিল, পিইডিপি-২ শেষ হয়ে গেছে অথচ প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার আজো গঠিত হয় নি। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনেকেই এখন উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী। সরাসরি নিয়োগকৃত প্রধান শিক্ষকগণের ন্যূনতম যোগ্যতা মাস্টার্স ডিগ্রি। বেকারত্ব ও ভালো চাকরির সীমিত সুযোগের জন্যই তারা শিক্ষকতা পেশায় আসেন। স্বেচ্ছায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করা সত্ত্বেও নিম্ন বেতন স্কেল আর পদোন্নতির সুযোগ না থাকায় তাদের মাঝে সন্তষ্টি থাকে না। মনেপ্রাণে বা মহান ব্রত হিসেবে শিক্ষকতাকে দেখতে পারেন না। তারা শিক্ষকতা না করে চাকুরি করেন। তারা মূলত অভিভাবকদের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কিছুটা আত্মনির্ভরশীল হয়ে অন্য চাকরি খোজার জন্যই শিক্ষকতা করেন। উচ্চশিক্ষিত নিম্ন বেতন স্কেলে সারাজীবন একই পদে চাকরি করায় হীনমন্যতা ও হতাশায় ভোগেন এসব শিক্ষকগণ। সামাজিকভাবেও তাদের সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা তখনই শিক্ষকতা পেশায় স্ব-ইচ্ছায় আসবেন এবং আসার পর থেকে যাবেন যদি উপরে উঠার সিঁড়ি থাকে এবং পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা থাকে। অনেক উন্নত বিশ্বেই মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকতা পেশায় আসেন, তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন ভাতা দেয়া হয়, শুধু প্রাইমারি শিক্ষক বিবেচনায় নয়। আমাদের দেশে এই ব্যবস্থা চালু করতে পারলে প্রাথমিক শিক্ষার মান অবশ্যই উন্নত হবে।
বাংলাদেশে নারীশিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আশির দশক থেকে। গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের অধিকহারে শিক্ষাঙ্গনে আসতে মাধ্যমিক স্তরে উপবৃত্তি এবং বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। নারী-নির্যাতন রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। মেয়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত করার পাশাপাশি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলো নারী উন্নয়নে দৃষ্টিগ্রাহ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এ সংস্থাগুলো মেয়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজে নিয়োগ দিচ্ছে। সরকারী-বেসরকারীভাবে দরিদ্র ও গ্রামীণ মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে তাদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সমবায় সমিতি এবং ঋণ প্রদান কর্মসূচির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। শিক্ষা বিস্তারের মধ্য দিয়ে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যেরও বিকাশ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে নির্বিচারে নারীর ওপর নির্যাতনের দিন শেষ হয়ে আসছে। এখন যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে পাঠ্যসূচিতে নারী শিক্ষার বিস্তার ও জেন্ডারবিষয়ক পাঠ সংযোজন করা। বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় নারী। তাই নারীকে পেছনে রেখে এ দেশের অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীকে উন্নয়নের মূলধারায় আনতে হলে প্রথম পদক্ষেপই হচেছ শিক্ষা। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর গতি শ্লথ। এ দেশে ছেলেশিশুর তুলনায় মেয়েশিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ১৪ শতাংশ কম এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তা বর্তমানে প্রায় সমান। এটি একটি ভালো দিক। তবে প্রাথমিক শিক্ষার পর মাধ্যমিক স্তরের অষ্টম থেকে দশম শ্রেণীতে মেয়ে শিক্ষার্থীর ঝরেপড়ার হার অত্যন্ত বেশি। কারণ মেয়েদের ক্ষেত্রে পড়ালেখাকে প্রয়োজনীয় মনে না করা, মেয়েদের ওপর ঘর-গৃহস্থালীর কাজকর্মেও দায়-দায়িত্ব অর্পণ করা, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়া, সিদ্ধান্ত গ্রহণে মেয়েদের মতামতের গুরুত্ব না দেয়া। এক গবেষণায় দেখা গেছে শতকরা ৬০ ভাগ মেয়েশিক্ষার্থী বিয়ে হওয়ার কারণে মাধ্যমিক শ্রেণী থেকে ঝড়ে পরে।
ঢাকা শহরের সুবিধাবঞ্চিত পাঁচ লাখ শিশুর জন্য স্কুলসহ ৭৩টি শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান সরকার । ১৯৮৬, ৮৭, ৮৮, ৮৯ এবং ৯০ পর্যন্ত সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদেরও এই শিশুদের জন্য ‘পথকলি ট্রাস্ট’ নামে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেন নি। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় যে, সুবিধাবঞ্চিত শিশুকিশোরদের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা বলে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্নরকম অনুদানের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কিছু সংগঠন। বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে, আগের দুটি প্রকল্প ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয় মেয়াদে দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়নে ‘টেকসই’ পরিকল্পনার আলোকে সংশোধিত প্রকল্প হাতে নিয়েছে।’ রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন‘ শীর্ষক প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮৫ কোটি টাকা। রাজধানী ঢাকায় সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরের সংখ্যা ৫ লাখ। এই ৫ লাখ শিশু-কিশোরদের আক্ষরিক জ্ঞান, খাবার চাহিদা আর বাসস্থান সমস্যার সমাধানের জন্য ’আনন্দ স্কুল’ নামে প্রকল্পটি যথেষ্ট ভুমিকা রাখাতে পারে। সারাদেশে ৭০ লাখ ৬০ হাজার শিশু-কিশোর আছে, যারা সুবিধাবঞ্চিত। এরা স্কুলে যেতে পারছে না বিভিন্ন কারণে। কারণগুলো সনাক্ত করে এই শিশুদের শিক্ষার জন্য বিশেষ কিছু একটা করা দরকার।
বর্তমান সরকার মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । সেটি হচ্ছে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বই দেয়া। তবে সব বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষার্থীর হাতে এখনও সময়মতো পাঠ্যবই পৌছে না। ভুক্তভোগীদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে কিন্ডারগার্টেনের প্রথামিক ও নিম্নামধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দেশের ২৫ হাজার কিন্ডারগার্টেনের প্রাথমিক পর্যায়ের অর্ধেক শিক্ষার্থীই শুরুতে পাঠ্যবই পায় না। নিম্নামধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অবস্থা আরো খারাপ। তবে শুধু কিন্ডারগার্টেন নয়, সরকারী-বেসরকারী এবং ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও এই সংকট থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়। এ সংক্রান্ত বিশদ তথ্য-সংবলিত একাধিক প্রতিবেদন ইতিমধ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। সরকারী হিসেবে মতেই এখনও অনেক ঘাটতি আছে, ঘাটতি পুরনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
স্কুলগামী অনেক মেয়েরা বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পথে-ঘাটে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে এবং স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। সমাজপতিদের দৃষ্টিভঙ্গি, পথে-ঘাটে বখাটেদের উৎপাত, বিভিন্ন মন্তব্য, অশালীন উক্তি, দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া ইত্যাদি কারণে অনেক মাতাপিতা বাধ্য হয়ে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এই বিষয়টি এখন বিশেষভাবে দেখার সময় এসেছে।
১৯৯৫ সালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এ সময়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে দুই কিংবা তিনগুণ। সে অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। ফলে শিক্ষার গুণগতমান রক্ষা করা যাচ্ছে না। যতো দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
১৯৭৩ সালে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে ৩৬,১৬৫টি বিদ্যালয় এবং ১,৫৭,৭২৪জন শিক্ষকের চাকুরি জাতীয়করণ করেছিলেন তৎকালীন সরকার। দেশ গঠন তথা জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কথা ছিলো। দীর্ঘ আটত্রিশ বছর পেরিয়ে গেছে কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে তেমন একটা কাজ হয় নি। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তকারী শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে। আর মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু হয়নি শুধু পাশের হার বৃদ্ধি ছাড়া। পাশের হার বৃদ্ধি আর সত্যিকার অর্থে দক্ষতা অর্জন এবং জ্ঞান অর্জন করা এক কথা নয়। এই ব্যাপারটি আমাদের বুঝতে হবে ।
লেখক পরিচিতি
মাছুম বিল্লাহ বাংলাদেশে ইংলিশ টিচার্স অ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পূর্বে ক্যাডেট কলেজ ও রাজউক কলেজের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে। তিনি ভাব বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি নিয়মিত শিক্ষাবিষয়ে নানা প্রবন্ধ লিখছেন।
Dear Mr. Billah, Reality is different from Report. রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন- শিশু-কিশোরদের আক্ষরিক জ্ঞান (perhaps), খাবার চাহিদা (??) আর বাসস্থান সমস্যার (!!???) সমাধানের জন্য ’আনন্দ স্কুল’ নামে প্রকল্পটি যথেষ্ট ভুমিকা রাখাতে পারে। Really!! ROSC project generates huge quandary. I’m sharing my personal experience. I’ve opportunity to attend a number of meetings with DPEO, UEOs, URCs along with PD of ROSC and ESPs of one district. Also I did lot of field visits. There are bunch of issues, in brief- fake enrollment, counterfeit centers (annodo schools), double-triple-multiple enrollment, not maintain the Target group, no Monitoring, teachers are not taking classes regularly and so on. Most of the ESPs (education service provider, i.e., implementing NGOs) are making business from this project and have some political connection, you know. Other districts have identical & frustrated observation- again a useless project. Usually UEOs appeal authority to close this project as it hampers the education system. However, the foremost concern is that we place enrollment statistics & success story of ROSC into our mainframe-country wide accomplishment which put quality primary education in a dilemma. Thanks, Jaman