অর্থায়ন

দেশের সমৃদ্ধি অর্জনে শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন

গত কয়েক বছরে সামাজিক দিক দিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করে বিশ্বের দরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক উন্নয়নে হয়েছে রোল মডেল। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে হয়নি প্রত্যাশিত উন্নয়ন। এর জন্য শিক্ষাবিদরা দায়ী করেছেন জাতীয় চাহিদার সঙ্গে শিক্ষাখাতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেট বরাদ্দ না হওয়াকে।

বিভিন্ন কারণে দেশের শিক্ষার মান নিয়েও চিন্তিত হওয়ার অনেক যুক্তি রয়েছে। ফলে স্লোগান ওঠে ‘শিক্ষাব্যবস্থা পাল্টাতে হবে’, ‘শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে’ ইত্যাদি। কিন্তু বললেই তো আর শিক্ষাব্যবস্থা পাল্টানো যায় না। এর জন্য চাই জাতীয় চাহিদার নিরিখে যুগোপযোগী ও কার্যকর শিক্ষাব্যবস্থা

দেশের এই বিপুল আকারের শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন ও পরিচলনা করতে গেলে দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থের বরাদ্দ। কিন্তু শত সমস্যায় জর্জরিত এ-দেশে সাম্প্রতিক সময়ের বাজেটগুলোয় তাকালে শিক্ষাখাতে অর্থ বরাদ্দ দেখে বরাবরই হতাশ হতে হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠনের পরপরই জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১০ সালে শিক্ষানীতি প্রণীত হওয়ার পর থেকেই শিক্ষানীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নে জিডিপির অন্তত ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষাবিদরা। কিন্তু প্রতি বছর বাজেটের আকার বাড়লেও শিক্ষাখাতে যে বরাদ্দ থাকছে তা গত কয়েক বছর ধরে আনুপাতিক হারে কমেছে।


১০ বছর আগেও মোট বাজেটের যত শতাংশ শিক্ষাখাতের জন্য দেওয়া হয়েছিল, এখন এই খাতে বরাদ্দ সে তুলনায় কম। তখন শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ১২.৬ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে অর্থ বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ১১.৪১ শতাংশ বা জিডিপির ২.০৯ শতাংশ। তবে খুশির খবর হলো এবারের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে অর্থ বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে।


গত কয়েক বছরের শিক্ষাখাতে অর্থবরাদ্দের চিত্রটি দেখলে তার পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়। ১০ বছর আগেও মোট বাজেটের যত শতাংশ শিক্ষাখাতের জন্য দেওয়া হয়েছিল, এখন এই খাতে বরাদ্দ সে তুলনায় কম। তখন শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ১২.৬ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে অর্থ বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ১১.৪১ শতাংশ বা জিডিপির ২.০৯ শতাংশ। তবে খুশির খবর হলো এবারের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে অর্থ বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে।

গত ১৩ জুন ২০১৯ তারিখে জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ঘোষিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আকারের এই বাজেটের পরিমাণ ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি। বরাবরের মতো এবারেও প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

এই অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩.০৪ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১৬.৭৫ শতাংশ। এটি এখন পর্যন্ত শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে সর্বোচ্চ বাজেট। কিন্তু বাংলাদেশের সত্যিকার চাহিদার বিপরীতে শিক্ষাখাতে এই পরিমাণ অর্থ পর্যাপ্ত নয়, কারণ জাতীয় বাজেটের যেমন আকার বেড়েছে তেমনি বেড়েছে শিক্ষাব্যয়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সংখ্যা।

ঢাকা ঘোষণাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ তার জিডিপির ৬ শতাংশ বা বাজেটের অন্তত ২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউনেস্কোও এই পরিমাণ বরাদ্দের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছে। ইউনেস্কোর সুপারিশ মতে, বাজেটের ২০ শতাংশ এবং জিডিপির অন্তত ৬ শতাংশ ব্যয় করতে হবে শিক্ষায়।

গত ১০ বছরের বাজেটের দিকে তাকালে দেখা যায় শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ১০-১২ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। আর জিডিপির সঙ্গে তুলনা করলে গত ১৫ বছরে শিক্ষাখাতে ব্যয় ছিল মাত্র ২ শতাংশ যা এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের তুলনায় কম এবং দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম।

পাশ্চাত্যসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলো শিক্ষাখাতে গড়ে জিডিপির ৪ শতাংশের বেশি ব্যয় করে। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) হিসাব বলছে, শিক্ষাখাতে বাংলাদেশ তার জিডিপির যে অংশ ব্যয় করছে, তা দক্ষিণ এশিয়া দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।

সরকারি এই সংস্থাটির ২০১৬-১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভারত ৩.০৮ শতাংশ, পাকিস্তান ২.৭৬ শতাংশ, আফগানিস্তান ৩.৯৩ শতাংশ, মালদ্বীপ ৪.২৫ শতাংশ, নেপাল ৫.১০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ২.৮১ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দিয়েছিল। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মোট বাজেটের ৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করে, ইংল্যান্ড করে ৫.৬ শতাংশ, ব্রাজিল করে ৫.৬ শতাংশ, ইরান ৪.৭ শতাংশ, আর চীন করে ৪ শতাংশের ওপরে।


গত ১০ বছরের বাজেটের দিকে তাকালে দেখা যায় শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ১০-১২ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। আর জিডিপির সঙ্গে তুলনা করলে গত ১৫ বছরে শিক্ষাখাতে ব্যয় ছিল মাত্র ২ শতাংশ যা এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের তুলনায় কম এবং দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম।


কেবল শতাংশ হিসেব করলেই শিক্ষাখাতে অর্থ অপ্রতুলতার হিসেব পাওয়া যাবে না। গভীরে ঢুকলে উঠে আসবে আরও করুণ চিত্র। স্বতন্ত্র খাত হিসেবে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬ শতাংশ বা মোট বাজেটের ২০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হলেও অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে।

এই খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের একটি বড় অংশ যায় প্রযুক্তি খাতে। স্বতন্ত্র খাত হিসেবে শিক্ষাখাতে সত্যিকার অর্থে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ আরও কম। এছাড়াও বরাদ্দকৃত অর্থের একটি বড় অংশই আবার ব্যয় করতে হয় বেতন-ভাতাসহ নানা অনুন্নয়ন খাতে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এরকম অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয় ৩৭ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা খরচ করা হয় শুধু শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে।

দেশের অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদরা এই অপ্রতুল বরাদ্দকে গুণগতমানের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সামগ্রিক উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হিসেবে অভিহিত করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার মান নিয়েও নানাবিধ প্রশ্ন ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকের মান ও মর্যাদা নিয়েও প্রশ্ন আসে।

কিন্তু শিক্ষার মান ও শিক্ষকের সম্মান-মর্যাদার সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে বাজেট বরাদ্দের। পর্যাপ্ত অর্থের কারণে শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন, ভাতা ও সুবিধা দিতে পারছে না। দক্ষ শিক্ষক তৈরি করতে শিক্ষক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে পর্যাপ্ত নয় সরকারি অর্থ বরাদ্দ। তাহলে প্রশ্ন আসাই স্বাভাবিক যে কীভাবে শিক্ষার গুণগত মান তৈরি হবে?

যেসব শিক্ষকের পাঠদান ও যত্নের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা প্রস্তুত করা যায়, ওই শিক্ষকদেরই অনুপযুক্ত বেতন দিয়ে কীভাবে মান বজায় রাখা সম্ভব? এছাড়াও গত এক দশক ধরে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাংলাদেশ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতিও বেড়েছে। সেই তুলনায় শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ অপ্রতুল রয়ে গেছে।

বাজেট ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের চেয়ে শিক্ষাখাতে অর্থবরাদ্দের পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলত শিক্ষাখাতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ, গবেষণা, দক্ষ শিক্ষক সৃষ্টির কাজগুলো কার্যকরভাবে সম্ভব হচ্ছে না। এই সঙ্কট অধিক লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রাথমিক স্তরে।

দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নেই। নদীভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও সেসব শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের বসার জন্য প্রয়োজনীয় বেঞ্চ নেই। বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল নেই। বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে সীমানাপ্রাচীর নেই। খেলার মাঠও ব্যবহার অনুপযোগী। শিক্ষক সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন সমস্যা ও সুযোগ-সুবিধার অভাবও প্রকট। মূলত শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ কম থাকায় এ সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে। অথচ জাতি গঠনের এই আঁতুরঘরগুলোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ খুব বেশি দরকার।

এদিকে দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও ভুগছে অর্থ সঙ্কটে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও চাহিদা অনুযায়ী পায় না অর্থ বরাদ্দ। যতটুকু অর্থ বরাদ্দ পায় তার অধিকাংশই ব্যয় হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভৌত অবকাঠামোর পেছনে। গবেষণার জন্য নামমাত্র অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।

জাতীয় বাজেটের চরিত্রের মতো সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮১০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার বাজেটের মধ্যে মাত্র ১৬ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা গবেষণায় বরাদ্দ রেখেছে। এছাড়াও গবেষকদের জন্য নেই পর্যাপ্ত আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা গবেষণায় দিন দিন উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অর্থের অভাবে উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের গবেষণার সুযোগ দিতে পারছে না। এসব কারণে দেশে পর্যাপ্ত গবেষণা হচ্ছে না। ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নাম তুলতে ব্যর্থ হচ্ছে বারে বার।


যুক্তিসঙ্গতভাবে শিক্ষাকেই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়া উচিত ছিল। কারণ শিক্ষা একমাত্র দেশকে পশ্চাৎপদতা থেকে মুক্ত করতে পারে। শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বাজেট যে কতোটা জরুরি তা বোঝাতে দক্ষিণ কোরিয়াকে উদাহরণ হিসেবে নেয়া যায়। ৭০-এর দশকে বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির অর্থনীতি সমপর্যায়ের ছিল। কিন্তু পরবর্তী তিন দশকে আমাদের দেশকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। অন্যান্য অনেক কারণের পাশাপাশি শিক্ষাখাতে বড় বিনিয়োগও এই সাফল্যের অন্যতম কারণ।


অথচ যুক্তিসঙ্গতভাবে শিক্ষাকেই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়া উচিত ছিল। কারণ শিক্ষা একমাত্র দেশকে পশ্চাৎপদতা থেকে মুক্ত করতে পারে। শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বাজেট যে কতোটা জরুরি তা বোঝাতে দক্ষিণ কোরিয়াকে উদাহরণ হিসেবে নেয়া যায়। ৭০-এর দশকে বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির অর্থনীতি সমপর্যায়ের ছিল। কিন্তু পরবর্তী তিন দশকে আমাদের দেশকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। অন্যান্য অনেক কারণের পাশাপাশি শিক্ষাখাতে বড় বিনিয়োগও এই সাফল্যের অন্যতম কারণ।

বলা হয়ে থাকে সামাজিক, অর্থনৈতিক আর সাংস্কৃতিক উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজে মৌলিক পরিবর্তনের জন্য যেটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেটি হলো শিক্ষা। আর তাই শিক্ষাই শক্তি। এই কারণে বৃহৎ স্বার্থে এই খাতে বৃহৎ বিনিয়োগ জরুরি। শিক্ষাখাতে সরকার যত বিনিয়োগ করবে, দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন ততই ত্বরান্বিত হবে।

আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার সর্বোচ্চ বাজেট দিলেও তা মোটেই পর্যাপ্ত নয়। চলমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এই পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। শুধু বাজেট বাড়ালেই চলবে না, বাজেটের সুষম বণ্টন ও বাস্তবায়নও জরুরি। মোট কথা, সরকার যতই নতুন নতুন ও যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণোয়নের উদ্যোগ নিক আর শিক্ষা প্রসারে উদারতা দেখাক, শিক্ষাখাতে স্বতন্ত্রভাবে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে তার সকল শুভ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বাধ্য।

User Review
0 (0 votes)
খুর্শিদ রাজীব

গৌতম রায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

Recent Posts

মানুষের দুর্নীতিবাজ হওয়ার পেছনে শিক্ষকের দায় কতটা?

দুর্নীতিতে বাংলাদেশ বেশ কয়েকবার পুরো বিশ্বে দখল করেছে শীর্ষস্থান! বাংলাদেশে বড় বড় প্রকল্পে বড় ধরনের…

3 মাস ago

মুখস্থবিদ্যা কতোটুকু গুরুত্বপূর্ণ?

নতুন শিক্ষাক্রমের প্রবর্তকেরা এবং তার সমর্থকরা এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে সবার আগে মুখস্থবিদ্যার ওপর নির্ভরশীল…

4 মাস ago

নতুন শিক্ষাক্রম : জাপানের সাথে তুলনা কতোটুকু প্রাসঙ্গিক?

বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থার নতুন শিক্ষাক্রমের আবশ্যিক বিষয় জীবন ও জীবিকার ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির…

4 মাস ago

কেন ক্লাস করতে চায় না শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা কেন ক্লাস করতে চায় না এই প্রশ্নটি নতুন নয়। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের…

6 মাস ago

শিক্ষকের মান ও গুণগত শিক্ষা

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩-এর প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, "কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার জন্য শিক্ষক: শিক্ষক স্বল্পতা পূরণ বৈশ্বিক…

6 মাস ago

বিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাসিক ব্যবস্থাপনা : প্রয়োজন যথাযথ উদ্যোগ

মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব তাদের জীবনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যেটি বাংলাদেশের মেয়েদের ক্ষেত্রে দশ বছর থেকে…

7 মাস ago