স্বপ্ন ও বাস্তবতা : টানাপোড়েনে শিক্ষকতা

স্নাতক সম্মানের স্বার্থে আমাকে প্রায় পাঁচ মাস শিক্ষকতা করতে হয়েছে। এর আগে পাক্কা তিন বছর কীভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াতে হয় তা নিয়ে ব্যাপক শিক্ষাদান করা হয়েছে আমার সহপাঠীদের এবং আমাকে। শিক্ষকতা শুরু করার আগে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা ছিল। শিক্ষাবিজ্ঞানের নতুন নতুন তত্ত্ব ও কলা-কৌশল যখন জানতে লাগলাম, তখন মনে মনে নিজের বিদ্যালয় জীবনের শিক্ষকদের প্রতি এক ধরনের ক্ষোভ জন্মাতে লাগল। আহা! আধুনিক শিক্ষাবিজ্ঞানের কত তত্ত্ব, নিয়ম-নীতি! এগুলো শ্রেণীকক্ষে প্রয়োগ করে কতোই না কার্যকরভাবে পড়ানো যায়। একেকজন শিক্ষার্থীকে পণ্ডিত না বানিয়ে এবারে আর ক্ষান্ত হচ্ছি না! আসন্ন শিক্ষকতার জন্য মহাপরিকল্পনা হাতে নিলাম। শ্রেণীকক্ষে এমন শিক্ষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করব যে সবাই টাশকি খেয়ে যাবে। আমরা আইইআরের শিক্ষার্থীরা এবার না জানি কী করে দেখাব। শ্রেণীকক্ষে বিপ্লব এনে দেব। ক্লাসে শিক্ষকগণ যখন আমাদের পড়াতেন, তখন আমরা আধুনিক শিক্ষাবিজ্ঞানের উপায়গুলো নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী হতাম। কিন্তু যখন সত্যিকার অর্থে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পা দিলাম তখন থেকেই মনের মাঝে খটকা লাগতে শুরু করল? নিজেকে প্রশ্ন করলাম, “সত্যি পারব তো?”

যেদিন থেকে নিয়মিত ক্লাস নিতে শুরু করলাম, সেদিন থেকে বাস্তবতা অনুধাবন করতে পারলাম। নিজের বিদ্যালয় জীবনের শিক্ষকদের প্রতি সকল ক্ষোভ দূর হয়ে তার পরিবর্তে ভক্তি স্থান করে নিল। কীভাবে আমাদের শিক্ষকগণ আমাদের পড়াতেন? শ্রেণীকক্ষ যে এতটা চ্যালেঞ্জিং তা বিদ্যালয়ে ক্লাস না নিলে কোনোদিনও অনুধাবন করা সম্ভব নয়। শিক্ষাবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক বুলি বোধহয় গবেষণা প্রতিবেদন আর পাঠ্যবইয়েই সীমাবদ্ধ। বাস্তবতার সাথে তার বিস্তর ফারাক। তত্ত্বীয় জ্ঞান অনেকটাই আদর্শ অবস্থা নিয়ে কাজ করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে একটি বাস্তব শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ অনেকটাই ভিন্ন। এটা আসলে গবেষণা করে ফর্মুলা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।

শ্রেণীকক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। যতই প্রস্তুতি নিয়ে যাই না কেন ক্লাসে এমন একেকটা ঘটনা বা পরিস্থিতির সম্মুখীন নিত্যদিন হতে হয় যে, সকল প্রস্তুতি মাঠে মারা যায়। নতুন নতুন পরিস্থিতিতে স্বীয় কর্তব্য নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ি। বইয়ে পড়া জ্ঞান দিয়ে সমাধান করতে চাই কিন্তু ব্যর্থ হই। শেষমেষ কমনসেন্স প্রয়োগ করে রেহাই পাই। সব সময়ে যে রেহাই পাই তাও না। আসলে আমি পড়ার বিষয়বস্তু সম্পর্কে হাজারো প্রস্তুতি নিয়ে গেলেও ঐ দিন ক্লাসে কী ঘটবে তা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি না। একেকদিন ক্লাসে একেক শিক্ষার্থীর মনের অবস্থা একেক রকম থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- শিক্ষার্থীরা সবাই শিশু। তারা এতটা ম্যাচিউরড না যে কোন পরিস্থিতিতে কী আচরণ করতে হবে তা জানে। শিক্ষককে অপদস্থ করতে তারা সিদ্ধহস্ত। অনেক ক্ষেত্রেই তারা শ্রেণী শিক্ষককে প্রতিপক্ষ মনে করে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে না বুঝে বিরক্ত করে, তার ধৈর্যের পরীক্ষা নেয় আর মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা তাদের বয়ঃসন্ধির কল্যাণে শিক্ষককে এক হাত দেখে নিতে সচেষ্ট হয়। আর শিক্ষক যদি অভিজ্ঞ না হয় তাহলে তো শিক্ষক বেচারার মাথায় হাত দেয়া ছাড়া গতি থাকে না। এসব বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।

শিক্ষক হিসেবে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো নতুন কিছু করতে যাওয়া। সাধারণত আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়ে অভ্যস্ত। শারীরিকভাবে আঘাত না করলে তারা শিক্ষককে দুর্বল মনে করে। ফলে তাকে খেপিয়ে তুলতে চায়। কিন্তু শিক্ষাবিজ্ঞানে শিক্ষার্থীকে শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রহারকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা শিক্ষাবিজ্ঞানের এ নিষেধকে সম্মান দেখাতে গিয়ে লক্ষ করেছি শিক্ষার্থীরা একপ্রকার আশকারা পেয়ে গিয়েছে। তারা তাদের নিয়মিত শিক্ষকদের মেনে চললেও আমাদের কথা শুনতে চায় না কারণ আমরা মারি না। এক্ষেত্রে আমাদের মতো প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদেরকে শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব বজায় রাখতে হয়েছে। এছাড়া আমরা নিরুপায় ছিলাম। তবে শিক্ষার্থীদের সাথে সদ্ব্যবহার করলে অনেকাংশেই আমাদের সহযোগিতা করেছে। কখনো কখনো সদ্ব্যবহারের সুযোগে আমাদের হেনস্তা করতে চেয়েছে। তাদের বয়সের কারণেই তারা এমনটি করেছে বলে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান বলে।

শ্রেণীকক্ষে সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা থাকে। প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন, “ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়”। দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা অন্যদের থেকে ভালোটার চেয়ে খারাপটাই রপ্ত করতে চায় বেশি। একটু ভালো পরিবারের শিশুটির থেকে ভালো কিছু শেখার পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত খারাপ পরিবারের শিশুটির থেকে ভালো পরিবারের শিশুটি খারাপ আচরণই শিখে বেশি। এর ব্যতিক্রমও লক্ষ করা যায়। শিক্ষক হিসেবে এ বিষয়গুলো মনিটর করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। যেখানে প্রাথমিক স্তরে শ্রেণীকক্ষে একজন শিক্ষকের বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা বলা হয়, সেখানে খুব কম করে হলেও ক্লাসে ৪০ জনের ওপরে শিক্ষার্থী থাকে। অনেকের ক্লাসে ৯০ জনের ওপরেও শিক্ষার্থী ছিল। এত সংখ্যক শিক্ষার্থীর ক্লাস কার্যকরভাবে নেয়া দুষ্কর। সত্যি কথা বলতে কী অসম্ভব। শিক্ষকরা অতিমানব হয়। হাজার প্রশিক্ষণ নিলেও ৯২ জন বাচ্চার ক্লাস ভালোভাবে নেয়া কোনো শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নয়। ক্লাসের সর্বোচ্চ সময় থাকে ৪০-৪৫ মিনিট। এর ভেতরে শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করে তাদের মাঝে প্রয়োজনীয় প্রেষণা সৃষ্টি, পাঠের উপযোগী পরিবেশ তৈরি, পাঠ ঘোষণা, পাঠ উপস্থাপন, শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার, শিক্ষার্থীদেরকে দলে কাজ করতে দেয়া, তাদের মূল্যায়ন করা, সর্বোপরি এত বিশাল একটি শিক্ষার্থী দলের দিকে সমানভাবে মনোযোগ দিয়ে শ্রেণী ব্যবস্থাপনা করে, ক্লাসে শৃঙ্খলা বজায় রেখে কার্যকর ও উপযুক্ত পাঠদান অসম্ভব।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এত সংখ্যক শিক্ষার্থীর মনোযোগ ধরে রাখা সুপারম্যানের পক্ষেও অসম্ভব। শিক্ষার্থীদের শিখন স্থায়ী ও কার্যকর করতে যে শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করা প্রয়োজন, তা প্রস্তুত বা সংগ্রহ করার মতো অর্থ শিক্ষকদের দেয়া হয় না। শিক্ষকরা আসলে নামমাত্র সম্মানীর বিনিময়ে কাজ করেন। তাছাড়া শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করার জন্যে শ্রেণীকক্ষে যে পরিবেশগত ও অবকাঠামোগত সাপোর্ট দরকার তাও থাকে না। শিক্ষাবিজ্ঞানের তত্ত্বীয় ক্লাসে যতই আকর্ষণীয় ও উৎসাহবব্যঞ্জক কলাকৌশল, পদ্ধতি ও তত্ত্বের কথা বলা হোক না কেন, শিক্ষকদের এই করতে হবে সেই করতে হবে এসব বলা হোক না কেন; বাস্তবে তা কখনই সম্ভব নয় যদি না শিক্ষকদের সে সাপোর্ট দেয়া সম্ভব না হয়। শ্রেণীকক্ষের আকার, শিক্ষকদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, তাদের বেতন ভাতা এসব বিষয় বিবেচনা করলে আমরা বুঝতে পারি যে কেন শিক্ষাবিজ্ঞানের ওপর গাদা গাদা গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার মান উন্নত ও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছাতে পারছে না। মাঠ পর্যায়ে সমস্যা যে কতটা ব্যাপক ও গভীর তা মাঠ পর্যায়ে তথা সাধারণ বিদ্যালয়গুলো শিক্ষকতা না করলে বোঝা সম্ভব নয়। শিক্ষাবিজ্ঞানের আধুনিক তত্ত্ব একটি আদর্শ অবস্থার জন্য কার্যকর হতে পারে কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে আমাদেরকে অনেক কিছু বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষকদের ওপর একনাগাড়ে দোষ চাপালে চলবে না। শ্রেণীকক্ষে, বিদ্যালয়ে সর্বোপরি মাঠপর্যায়ে তারা কী সমস্যায় পতিত হন তা আমাদেরকে খতিয়ে দেখতে হবে। সে অনুযায়ী গবেষণা করে কর্মকৌশল প্রণয়ন ও গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষকরা কী ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন তার কিছু নমুনা উপরে বলেছি। এর বাইরেও আরো অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা রয়েছে।

জনপ্রিয় নিবন্ধ

প্রাথমিক স্তরে ভাষা শেখা : বিষয় – বাংলা

ভাষার দক্ষতা চারটি— শোনা, বলা, পড়া, লেখা। আর ভাষা...

আগে ইংরেজি গ্রামার শিখবো, নাকি ভাষা শিখবো?

কোন ভাষার গ্রামার হলো ঐ ভাষার গঠন প্রকৃতি যার...

শিক্ষাব্যবস্থার হালচাল

অর্থনীতিবিদদের মতে, শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ সবচেয়ে লাভজনক এবং নিরাপদ রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডো এবং মার্শালের মতে, শিক্ষা এমন একটি খাত যার কাজ হলো দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলে পুঁজির সঞ্চালন ঘটানো। শিক্ষার অর্থনীতি নিয়ে মৌলিক গবেষণায় অর্থনীতিবদ আর্থার শুল্জ ও রবার্ট সলো দেখিয়েছেন যে, প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ করলে সম্পদের সুফল ফেরত আসে ৩৫ শতাংশ, মাধ্যমিক শিক্ষায় ২০ শতাংশ, এবং উচ্চ শিক্ষায় ১১ শতাংশ।

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা : পিএইচডির পর কী?

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়, আমি নিজেও এ-নিয়ে...

ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা

ক্যাডেটসমূহ বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।...

আরও কিছু লেখা

অধিক

    অটিজম, অটিস্টিক শিশু ও তাদের শিক্ষা

    খলিল হাসান লিখেছেন অটিজম, অটিস্টিক শিশু ও তাদের শিক্ষা...

    শিক্ষক-শিক্ষা সহজলভ্যকরণ: উপায় ও সম্ভাবনা

    যুগের পর যুগ শিক্ষক-শিক্ষা এদেশে থেকেছে অবহেলিত ও প্রায় অদৃশ্য। সময় এসেছে পরিবর্তনের। সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট চালুকরণ দেশে শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি সুদূরপ্রসারী ভাবনার প্রতিফলন।

    ফ্রান্সিসকো গার্দিয়া ফেরার: আধুনিক বিদ্যালয়: ধারণা, চর্চা ও বিবর্তন – পর্ব ৩

    যৌথশিক্ষাকে ফ্রান্সিসকো গার্দিয়া ফেরার খুবই গুরুত্বপূর্ণ দর্শন হিসেবে মনে...

    প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ১০০% করার টেকনিক: একজন শিক্ষকের অভিজ্ঞতা

    কামাল উদ্দিন লিখেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিয়ে এই টেকনিক প্রয়োগ...

    ইংরেজি মাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের লেখাপড়া

    ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা জাস্টিন বুইবেন বা অ্যাকর্ন-এর গান শোনে, তারা রুনালায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন এবং লালনগীতি জানে না, জানে না মমতাজ কে। ইংরেজি মাধ্যমের একটি ছেলে বা মেয়েকে শুধুমাত্র ইংরেজি বলতে পারা এবং উপস্থাপন দক্ষতা ছাড়া প্রশংসা করার মতো তেমন আর কিছু নেই। তারপরও তারা যে শুদ্ধ ইংরেজি বলছে তা কিন্তু নয়। তারা আমাদের নিজস্ব কালচার সম্পর্কে অজ্ঞ, আমাদের সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না বা শ্রদ্ধা দেখায় না। শিক্ষার যে মূল উদ্দেশ্য তা কিন্ত এখানে হচ্ছে না।

    কীভাবে শিক্ষার্থীর লিখন দক্ষতা বাড়াবেন

    রিফাত আফরোজ লিখেছেন শিক্ষার্থীর লিখন দক্ষতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে বাংলাদেশে...

    কার্যকর শিখনে কোনটি জরুরি: মুখস্থ নাকি আত্মস্থ?

    কবি বলেছেন, “গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা...

    প্রাসঙ্গিক নিবন্ধসমূহ

    নতুন লেখার খবর পান ইমেইলে
    বাংলাদেশের শিক্ষা প্রসঙ্গে নতুন লেখা প্রকাশিত হলে সেই খবর পৌঁছে যাবে আপনার ইমেইলে।