বাড়ি ভাষা শিক্ষা সাইনবোর্ড ও শিশুর বানান শিক্ষা

সাইনবোর্ড ও শিশুর বানান শিক্ষা

সাইনবোর্ডে ভুল

একটি শিশু তার চারপাশের পরিবেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে থাকে। সে যা দেখে তার সম্পর্কেই কৌতুহল প্রকাশ করে। আর কৌতুহল থেকেই সে শিখে থাকে। একে আমরা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা বলতে পারি। এই শিক্ষা তার পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই এই সময়ের শিক্ষাটা যদি ভালো হয় তবে তার সুফল আমরা চিরদিন পেতে পারি।

শিশু যখন থেকে অক্ষরের সাথে পরিচিত হয় ও বানান করতে শিখে তখন থেকে যেন এক নতুন জগতে প্রবেশ করে। সে দেখে তার চারপাশে নানান কিছুর বানান ছড়িয়ে ‌ছিটিয়ে আছে। শিশু রাস্তায় চলতে গিয়ে সাইনবোর্ড দেখে, বাড়িতে টেলিভিশনে দেখানো বিজ্ঞাপনে বড় বড় হরফে অনেক কিছুর নাম দেখে, সংবাদপত্রে বড় বড় হরফে সংবাদ শিরোনাম দেখে দেখে অনেক কিছুর বানান শিখতে পারে। তার বয়সটাই এমন যে, যে শব্দ দেখে তার বানানই বলতে চেষ্টা করে। বলতে বলতে এক সময় সে শিখে ফেলে ঐ শব্দের বানান।

আমরা আমাদের আশেপাশে নানান রংয়ের ও বর্ণের সাইনবোর্ড দেখতে পাই। এর কিছু ডিজিটাল, আবার কিছু হাতে লেখা সাইনবোর্ড। এছাড়াও রাস্তায় যে সব গাড়ি চলে তাতে আমরা নানান শব্দের ব্যবহার দেখতে পাই। প্রায় সময়ই দেখা যায় এই সব সাইনবোর্ডে বানান ভুল থাকে। নানান কারনে বানানে ভুল হয়ে থাকে। এর মধ্যে আছে-সাইনবোর্ড লেখকের বানানের জ্ঞানের স্বল্পতা, যিনি লিখতে দিয়েছেন তার জ্ঞানের স্বল্পতা, লেখার সময় সাবধানী না হওয়া, এড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি। যদিও বিষয়টি তাদের কাছে বিশেষ একটা গুরুত্ব বহন করে না বলেই মনে হয়।

কিন্তু এই বানান ভুলের মাশুল দেয় কোমলমতি শিশুরা। ধরা যাক একটি শিশু প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে একটি মিষ্টির দোকানের সামনে দিয়ে যায়। দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা আছে “গোপাল মিস্টান্ন বান্ডার”। তাহলে কি হবে? শিশুটি শিখবে মিষ্টি বানান মিস্টি, যেখানে মিষ্টি থাকে তাকে বলে বান্ডার। পরবর্তীতে সে যখন বিদ্যালয়ে মিষ্টি বানানটি দেখবে তখন তার কাছে এটা বেশি মিষ্টি লাগবে না। তার কাছে মনে হবে মিস্টি বানান ই সঠিক। কারন সে দিনের পর দিন এই বানানটিই দেখে আসছে। এতো দিনের চোখের দেখা সে কিভাবে ভুলে যেতে পারে। এর দায় ভার কে নিবে?

আমাদের উচিত হবে এই সব সাইনবোর্ড লেখকদের জানানো। শুদ্ধ বানানের কি উপকারিতা। তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়া যারা সাইনবোর্ড লেখায় তাদেরও উচিত হবে শুদ্ধ বানান টা লিখে সাইনবোর্ড লেখকদের হাতে ড্রাফট কপি দেওয়া। যাতে করে তারা বানান শুদ্ধ করে লিখতে পারে।

1 মন্তব্য

  1. আসলে সত্য কথা। আমাদের বাচ্চারা প্রতিদিন চারপাশে যা দেখছে তাই সে শিখছে। আমিও আপনার সহিত এক মত। যারা সাইনবোর্ড লেখেন বা যারা সাইনবোর্ড লেখান তারা যদি একটু খেয়াল করেন তা’হলে এ’ধরনের ভুল আর হয় না। আমার ছেলেকে যখন বানানের ব্যাপারে বলি তখন অনেক ক্ষেত্রে সাইনবোর্ড বা টিভি বিজ্ঞাপনের কথা বলে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version