মারুফ ক্লাসের ফাষ্ট বয়। বাংলা, ইংরেজি, গণিত সব বিষয়েই সমান পারদর্শী। তাকে নিয়ে বাবা মায়ের গর্বের শেষ নেই। একমাত্র ছেলে তাই কোন কাজ করতে হয়না। পড়াশোনা নিয়েই সারাদিন কেটে যায়। একদিন বিপত্তি বাধে। মারুফের বড় মামা আসে বেড়াতে। বাসায় বাবা উপস্থিত না থাকায় মারুফকেই বাজারে যেতে হয়। এই প্রথম বাজারে আসা। আলু, পটল, মাছ, মাংস ইত্যাদি কিনতে হবে । কিভাবে কিনতে হবে জানেনা সে। দৈনন্দিন জীবন শিক্ষা কতোটুকু কার্যকর তাহলে?
মারুফ আলুর দোকানদারকে গিয়ে বলল, আলুর দাম কত?
: ২০, দোকানদারের সোজা উত্তর।
মারুফ দ্বিধায় পড়ে গেল, কিছুদিন আগেই মায়ের সাথে বাসা থেকে স্কুলে যাবার পথে কমলা কেনা দেখেছিল সে। হালি ৫০ টাকা।
সে ভাবল এই ছোট ছোট আলু প্রতিটির দাম ৫ টাকা হতেই পারেনা।
এই সময়ে আরো একজন এসে আলু কিনে নিল। তাকে দেখে মারুফ শিখলো কিভাবে আলু কিনতে হয়। এমন করে কিছু সময় নিয়ে বাজার থেকে অনেক কিছু কিনলো সে।
মানুষ সামাজিক জীব। তাই সমাজে চলতে গিয়ে নানান সামাজিকতা মানতে হয়। কিন্তু কোন পরিবেশে কি করতে হবে তার শিক্ষা আমরা কোন আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় পাইনা। অনানুষ্ঠানিক ভাবে তা শিখতে হয়।
হিসেবে চলতে নানান ধরনের কাজ কর্ম করতে হয়।
এমন হাজারো সমস্যায় আমাদের মাঝে মাঝেই পড়তে হয়। তার একটি হল ব্যাংকে চালান কিংবা ব্যাংক ড্রাফট করা। কি ভাবে এগুলো করতে হবে তা অনেকের কাছেই অজানা। এমনকি যারা বাণিজ্য অনুষদে পড়ে তাদের ও পাঠ্যবইয়ে থাকে না কিভাবে চালান কিংবা ব্যাংক ড্রাফট করতে হয়।
এসব আমাদের জীবন ঘনিষ্ঠ শিক্ষা। এক কথায় দৈনন্দিন জীবন শিক্ষা। যা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনুপস্থিত। জীবনকে সঠিক ভাবে ও সহজ ভাবে চালাতে এই জীবন শিক্ষা আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন। আর তার ব্যবস্থা করা সরকারের একান্ত দায়িত্ব।
লেখক পরিচিতি
মুশফিকুর রহমান
মুশফিকুর রহমান বাংলাদেশের শিক্ষা ওয়েবসাইটের একজন সহ-সম্পাদক।
এই রকম লেখাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবে, প্রত্যাশা করি।
@রিং আশা করি এ ব্যাপারে আপনাদের সাহায্য পাবো।
এক কথায় অসাধারণ । খুব সংক্ষিপ্তভাবে আমার মতটা এরকমঃ প্রাইমারী স্কুলের অন্তত অর্ধেক অংশের শিক্ষার বিষয় হোক বাস্তব জীবন যাপন সম্পর্কে জ্ঞান ও ধারনা । তাহলে যে শিশুরা প্রাইমারী স্কুলের পর ঝরে যায়, তারা ও সমাজে চলার মত বাস্তব জ্ঞান নিয়ে সমাজে ফিরে যেতে পারবে ।
আপনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। আসুন আমরা যার যার অবস্থান থেকে এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করি। সবার সম্মলিত প্রচেষ্টায় আশা করি একদিন পরিবর্তন আসবে। সব ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে।