আমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি বলার চর্চা কতটা হচ্ছে- এ প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই বড় ’না’ বোধক হবে। শিক্ষক যখন ইংরেজি পড়ান তিনি কি তখন ইংরেজি বলেন? তিনি ইংরেজি বলেন না কারণ কেউ কেউ মনে করেন ইংরেজি বললে শিক্ষার্থী তার কথা বুঝবে না। আসলে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বলা উচিত কারণ কৈশোরে বয়সের শিক্ষার্থীরা যতটুকু শুনবে ততটুকু মনে রাখতে পারে। তার অনুকরণপ্রিয়। শিক্ষক যা করবেন, তারাও তাই করবে, শিক্ষক যা বলবেন তারাও তাই বলবে। আমার মনে আছে আমি প্রায়ই ক্লাসে ইংরেজি বলতাম। ছাত্রছাত্রীরা মজা করে বা ব্যঙ্গ করে, অনুকরণ করে হোক কিংবা বয়সের কারণেই হোক, তার ঐ শব্দগুলো বলতো। অর্থাৎ শব্দগুলোর ব্যবহার তারা শিখেছে। এভাবে শিক্ষক যখন তাদের ইংরেজিতে কোনো বাক্য জিজ্ঞেস করবে, তখন তারা বাক্যটি শিখে ফেলবে এবং বাস্তবজীবনে ব্যবহার করতে শিখবে। তারা জেনেছে কোন অবস্থায় এই বাক্যটি ব্যবহার করতে হয়। মাতৃভাষা ব্যতীত অন্য কোন দ্বিতীয় ভাষা শিখার এটি একটি উৎকৃষ্ট উপায় ।
ইংরেজি বলার চর্চা করার মাধ্যমে ইংরেজি শিখার ফলে একদিকে যেমন ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর এবং শিখনবান্ধব করে অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী, সাহসী করে তোলে এবং সর্বোপরি ইংরেজি ভাষা মূলত যে জন্য আমরা শিখি সেই উদ্দেশ্যগুলোও সফল হবে। আর ক্লাসে যখন এ ধরনের পরিবেশ বিরাজ করে যে, ছাত্র-শিক্ষক এক বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ শিখন-শেখানোর কাজ করছেন, তখন শিক্ষার্থীরা সব সময়ই আকর্ষণ থাকবে ক্লাসের দিকে। তার ঐ বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ থেকে নিজকে দূরে রাখতে চাইবে না অর্থাৎ ক্লাসে থাকার কিংবা আসার জন্য উদগ্রীব থাকবে। শিক্ষক কোন অবস্থায় কী বাক্য ব্যবহার করতে হয়, কোন বাক্যে কি ধরনের শব্দ ব্যবহার করতে হয় তা শিক্ষার্থীরা ক্লাসে স্পোকেন ইংরেজির মাধ্যমেই শিখে ফেলবে, আলাদা বই থেকে অবাস্তব অবস্থা থেকে মুখস্থ করবে না।
ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষক কেউ বলবে না যে, এগুলো পরীক্ষায় থাকবে না, কিংবা স্পোকেন ইংরেজির উপর পরীক্ষা হবে না, আমরা এগুলো কেন শিখব? তার সিলেবাসে লিখিত পরীক্ষার প্রাকটিস স্পোকেন ইংরেজির মাধ্যমেই করছে। ক্লাস হচ্ছে আনন্দময়, তারা অযথা সময় নষ্ট করবে না, দুষ্টুমি করবে না, বাইরে অযথা তাকাবে না আর ক্লাসও বোরিং মনে হবে না কারণ শিক্ষার্থী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে ।
লেখক পরিচিতি
মাছুম বিল্লাহ বাংলাদেশে ইংলিশ টিচার্স অ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পূর্বে ক্যাডেট কলেজ ও রাজউক কলেজের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে। তিনি ভাব বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি নিয়মিত শিক্ষাবিষয়ে নানা প্রবন্ধ লিখছেন।