আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২১-এর শ্লোগান বা প্রতিপাদ্য হচ্ছে: Literacy for a human-centred recovery: Narrowing the digital divide বা মানব-কেন্দ্রিক মুক্তিলাভের জন্য সাক্ষরতা: ডিজিটাল বিভক্তিকে কমিয়ে আনা। বিশ্বব্যাপী শিশু, যুবক এবং বয়স্কদের শিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে কোভিড-১৯-এর কারণে। সাক্ষরতা ও শিক্ষায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্যকে প্রকটতর করেছে এই কোভিড মহামারী। ৭৭৩ মিলিয়ন নিরক্ষর জনগণের জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে।
বহু দেশই কোভিড-১৯ মোকাবিলা করার জন্য যেসব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে, তার মধ্যে নিরক্ষরদের জন্য কোনো ধরনের ব্যবস্থা যেমন, সাক্ষরতা ধরে রাখা কিংবা সাক্ষরতা ভুলে না যাওয়ার জন্য কোনো ধরনের পরিকল্পনা বা ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে অসংখ্য সাক্ষরতা কর্মসূচি কাজ করা প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এটি সত্য যে, প্রথমে আক্রান্ত মানুষদের বাঁচাতে হবে, যারা সুস্থ আছেন তারা যাতে আক্রান্ত না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে যাতে তারা নিজেরা আক্রান্ত না হয়, অন্যদের আক্রান্ত না করে।
দরিদ্র দেশগুলোর পক্ষে অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষদের খাবার পৌঁছে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। রাজনীতির তাগিদে গরীব রাষ্ট্রগুলোও তাদের জনগনকে কিছু দিয়েছে কিন্তু সেটি তো সমুদ্রের কাছে গোষ্পদের মতো। তবে এটিও সত্য যে, সব দরিদ্র দেশই প্রতিরক্ষাখাতে প্রচুর অর্থের অযথাই অপচয় করে চলেছে। এসব কারণে শিক্ষার এবং শিক্ষার মার্জিনাল পয়েন্ট অর্থাৎ সাক্ষরতার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। যাদের অবস্থান সাক্ষরতার বহু উপরে ছিলো গত সতের-আঠারো মাসে, তাদের অনেকেই সেই যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে অর্থাৎ নিরক্ষরতার কাতারে সামিল হয়েছে।
আমি নিজে আগস্টের ৩০ তারিখ থেকে ০২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রংপুর গাইবন্ধার বিভিন্ন বিদ্যালয়, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অবস্থা জানার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছি। শিক্ষার্থীদের সাধারণ বিষয় লিখতে যখন বলা হলো, দেখলাম যে লেখা তারা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে লেখার কথা, তা লিখতে কয়েক মিনিট লগিয়ে দিচ্ছে, তারপরও লিখতে পারছে না। আমি নিজে বুঝলাম এবং সংশ্লিষ্টরাও বললো যে, এতোদিন লেখার অভ্যাস নেই বলে এই অবস্থা হয়েছে। এটি আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা।
বৈশ্বিক এই মহামারীকালে বিকল্প উপায়ে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে বিভিন্নভাবে। দূরশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হযেছে, মাঝে মাঝে ব্যক্তি উপস্থিতির সাথে ডিজিটাল লার্নিও পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু সাক্ষরতার জন্য এ জাতীয় কর্মসূচি সেভাবে পালন করা হয়নি। দ্রুত দূরশিক্ষন পদ্ধতির দিকে ঝুঁকে পড়ার কারণে ডিজিটাল বিভক্তি প্রকট আকার ধারণ করেছে। এক্ষেত্রে যে বৈষম্য নিয়ে বিষয়টি এগুচ্ছিলো, সেটি আরও তরান্বিত হয়েছে। প্রযুক্তির সাথে খাপখাওয়ানোর ক্ষেত্রে অপারগতা, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, বিদ্যুৎ স্বল্পতা, সংযোগ সমস্যা, আর্থ-সামাজিক অবস্থা এসব ক্ষেত্রে বৈষম্যের দ্বার খুলেছে অনেক। এই বিভক্তি কমানোর দায়িত্ব কার হাতে এবং কীভাবে কমাতে হবে সেটি নিয়ে ভাবার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষ্যে এবারকার স্লোগানে সেই কথাটি যুক্ত করা হয়েছে। তবে, এর মধ্যেও সুখবর হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের বিশাল এক জনগোষ্ঠী দ্রুততার সাথে খাপখাইয়ে নিয়েছে পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে। ফলে সুষ্টি হয়েছে নতুন এক ভার্চুয়াল জগত, যে জগতের সাথে আমাদের দরিদ্র মানুষের সে ধরনের পরিচিতি অর্থাৎ সাক্ষরতা ছিলোই না। যারা এর সাথে তাল এখনও মেলাতে পারেনি, তারা ডিজিটালি নিরক্ষর। ডিজিটাল সাক্ষরতা থেকে তারা দূরে থেকেছে। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় যারা এই আধুনিক ডিভাইসগুলোর সাথে পরিচিত নন, ব্যবহার করতে হিমশিম খাচ্ছেন কিংবা ব্যবহার করতে পারছে না তারা সবাই ডিজিটালি নিরক্ষর।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে অনলাইন পরীক্ষা চালু করতে পারে সেই বিষয়ে একটি অনলাইন সেমিনার ডাকা হলো আমেরিকান সেন্টার থেকে অক্টোবর মাসে। আমেরিকা থেকে এক প্রফেসর যোগদান করেছেন। প্রধান অতিথি ছিলেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান। আমরা পাঁচশোর মতো অতিথি সবাই অপেক্ষা করছি কিন্তু চেয়ারম্যান যোগদান করছেন না। আধ ঘণ্টা পরে যখন যোগদান করলেন, তখন তিনি বললেন যে, তিনি এখনও এসব ডিভাইসের সাথে পরিচিত নন, শীঘ্রই শিখে ফেলবেন। এটিকে আমরা ‘ডিজিটালি ইলিটারেট’ বলতে পারি।
কোভিড মহামারী সাক্ষরতার গুরুত্বকে আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এর আত্মিক গুরুত্বের বাইরেও শিক্ষা একটি অধিকার হিসেবে, সাক্ষরতা একজন মানুষকে ক্ষমতায়িত করে, জীবনমান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং এটি টেকসই উন্নয়নের চালিকাশক্তি। ২০২১ সালের আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস মানবকেন্দ্রিক পুনরুদ্ধারের শক্ত ভিত গড়তে অবদান রাখবে। সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতা এখন প্রয়োজন নিরক্ষর যুবক ও তরুণদের। এটি আরও আবিষ্কার করবে যে প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সাক্ষরতা, কাউকে বাদ দিয়ে নয়।
২০২১ সালের আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস একটি সুযোগ যা ভবিষ্যত সাক্ষরতাকে পুনরায় ভাবতে শেখাবে, সাক্ষরতার পুরাতন সংজ্ঞাকে প্রতিস্থাপিত করবে। ১৯৬৫ সালে তেহরানে অনুষ্টিতব্য শিক্ষামন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলেনে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস জন্মলাভ করে। ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস নিয়ে কর্মসূচির কথা। এ সময়ে বিশ্ব কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলো। যেমন, নিরক্ষরতা, দারিদ্র, বেকারত্ব, অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি। শিক্ষার ওপরেই গুরুত্বটা দেওয়া হয়েছিলো। নিরক্ষরতা দূরীকরণের ওপরও যাতে মানুষের জীবনমান উন্নত হয়।
সাক্ষরতা হচ্ছে সেই সোনালী অস্ত্র যার মাধ্যমে একজন মানুষের ক্ষমতায়ন ঘটে এবং স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সামর্থ্য অর্জিত হয়। নাম লিখতে পারার, নিজের সম্পর্কে লিখতে পারার মধ্যে সাক্ষরতা আর আটকে নেই। ডিজিটাল সভ্যতার এই যুগে সাক্ষরতাকে ভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে, তা না হলে বৈশ্বিক অগ্রগতি সমতালে তো নয়ই, বরং বহু ব্যবধান নিয়ে এগুবে। ডিজিটালি পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৭ সালে তাদের একটি প্রতিবেদনে দেখিয়েছিল যে, ওই বছর প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৮.৪ শতাংশ। যেসব শিশু কখনোই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়নি বা যায়নি, তাদের হার প্রায় দুই শতাংশ। এই হারের ওপর ভিত্তি করে হিসেব করা হয়েছে যে, সারাদেশে ৮-১৪ বছর বয়সী প্রায় ২.৮ মিলিয়ন শিশু রয়েছে যারা বিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছে। অর্থাৎ, এই অপার সম্ভাবনাময় শিশুরা নিরক্ষর।
সরকার বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী সকল শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে দারিদ্রের কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু হয় কখনও বিদ্যালয়ে যায়নি, কিংবা কখনও প্রাথমিকে ভর্তি হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রোগ্রাম (পিইডিপি-৪)-এর আওতায় ‘আউট অফ স্কুল চিলড্রেন প্রোগ্রাম’ এসব শিশুদের দ্বিতীয় সুযোগ হিসেবে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসছে।
২০২১-এর জানুয়ারি মাসে প্রথমবারে ৮-১৪ বছর বয়সী পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা। সে কাজটি কিন্তু সেভাবে এগোয়নি এই করোনার কারণে। এই উদ্দেশ্যে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর এনজিওদের সহায়তায় সারাদেশে ৩২০০০-এর বেশি লার্নিং সেন্টার স্থাপন করার কথা। বর্তমানে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো দেশের ছয়টি জেলায় (ঢাকা, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, গাইবান্ধা, সিলেট এবং সুনামগঞ্জে) পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে চালাচ্ছে এক লাখ শিক্ষার্থীর জন্য। এই পাইলট প্রজেক্ট শেষ হতে যাচ্ছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে।
তবে, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক বিদ্যালযে ভর্তির কারণে এটি হয়তো মার্চ ২০২২ পর্যন্ত গড়াবে। তাতে কি আমরা এই শিশুশিক্ষার্থীদের ডিজিটালি সাক্ষর করতে পারব? প্রায় দুই বছর এসব শিশু বইয়ের সংস্পর্শে থাকতে পারেনি। এমনিতেই তাদের যে গ্যাপ থাকে মূলধারার শিক্ষার্থীদের সাথে, করোনা সেই গ্যাপকে আরও বাড়িয়ে দিলো। তাই, আমার মনে হয় এই শিশুদের অর্থাৎ যাদের ওপর পাইলটিং করা হয়েছে, তাদের গ্যাপ কাটানোর জন্য, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য কমপক্ষে পুরো ষষ্ঠ শ্রেণিটিই এই প্রজেক্টের আওতায় তাদের ধরে রাখার ব্যবস্থা করা উচিত।
আমাদের দেশের অসহায় ও বঞ্চিত পথশিশুদের জন্য রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্পের আওতায় দেড় শতাধিক উপজেলায় ২২ হাজারেরও বেশি আনন্দ স্কুলে মোট ৬ লাখ ২৪ হাজার ১০৪ জন পথশিশু শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছিলো। কিন্তু দুর্নীতি ও অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আঠারো মাসের করোনাকালীন বন্ধে এসব আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মাঝে কোনো যোগাযোগ নেই। এই যোগাযোগ না থাকার অর্থ হচ্ছে, এখানকার শিশুরা যতোটুকু সাক্ষরতা অর্জন করেছিলো, চর্চার অভাবে তা ভুলে গেছে।
অবস্থা স্বাভাবিক হলে এসব শিশুর কত শতাংশ পড়াশুনায় ফিরে আসবে তা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। আবার যারা আসবে তারাও যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পড়াশুনার সাথে যুক্ত হতে পারবে এবং পড়াশোনা বুঝবে তাও কিন্তু নয়। তাদের জন্য প্রয়োজন হবে বিশেষ ব্যবস্থা যা হারিয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়া, পড়া ও লেখার দক্ষতা উদ্ধার হওয়ার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু আমরা কি সে ধরনের কোনো ব্যবস্থার কথা শুনছি বা দেখছি?
পথশিশু হওয়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ কিংবা মৃত্যু, অর্থলোভী কিছু মাদক ব্যবসায়ীর নিষ্ঠুর নজর। চরাঞ্চল নদী ভাঙ্গন, বন্যা কিংবা সাইক্লোন-ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে গৃহহারা মানুষদের একটি বড় অংশ আশ্রয় নেয় শহরের বস্তিগুলোয়। এসব পরিবারের শিশুরা নানা ধরনের অদক্ষ শ্রমিক ও শিশুশ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়, যেখানে মেলে নির্যাতন, বৈষম্য, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। ফলে, তারা অনেক অসামাজিক কার্যকলাপেও জড়িয়ে পড়ে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, পথশিশুদের ৫১ শতাংশ অশ্লীল কথা বলে, ২০ শতাংশ শারীরিক এবং ১৪.৫ শতাংশ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। পথশিশুদের ২৫-৩০ ভাগ মেয়ে, তাদের মধ্যে ৪৬ ভাগ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক এনহেন্সমেন্ট প্রোগ্রামের (সিপ) গবেষণা অনুযায়ী, পথশিশুদের প্রায় ৪৪ শতাংশ মাদকাসক্ত, ৪১ শতাংশের ঘুমানোর বিছানা নেই, ৪০ শতাংশ গোসল করতে পারে না, ৩৫ শতাংশ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে, ৫৪ শতাংশ অসুস্থ হলে দেখার কেউ নেই এবং ৭৫ শতাংশ অসুস্থ হলে ডাক্তারের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগযোগ করতে পারে না। পথশিশুদের ৮২ শতাংশ নানা ধরনের পেটের অসুখে এবং ৬১ শতাংশ কোনো না কোনো চর্মরোগে আক্রান্ত।
একই গবেষণায় বলা হয়েছে, ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ পথশিশু একটি নির্দিষ্ট স্থানে সর্বোচ্চ ছয় মাস থাকে। এই বিশাল সংখ্যক শিশু যাদের থাকার স্থায়ী জায়গা নেই, নেই বাবা-মায়ের কোনো খোঁজখবর, তারা নেই বিদ্যালয়ে, কে কোথায় কেমন আছে নেই তার কোনো খবর। এটি একটি বিশাল সামাজিক অনাচার। এই শিশুরা সমাজে এভাবেই বেড়ে উঠছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত অস্থায়ী কিছু বিদ্যালয়ে তারা সাধারণ মানের কিছু শিক্ষা পেতো যা ইতিমধ্যে ভুলে গিয়েছে কোনো কঠিন কাজ করতে গিয়ে, নয়তো কোনো অসামাজিক কাজ করতে গিয়ে। কী হবে এদের সাক্ষরতা পুনরুদ্ধারের? কোনো ব্যবস্থা হবে কি? নাকি আমরা এসি রুমে বসে পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্টেশন দিয়ে এদের নিয়ে কথা বলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো?
লেখক পরিচিতি
মাছুম বিল্লাহ বাংলাদেশে ইংলিশ টিচার্স অ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পূর্বে ক্যাডেট কলেজ ও রাজউক কলেজের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে। তিনি ভাব বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি নিয়মিত শিক্ষাবিষয়ে নানা প্রবন্ধ লিখছেন।