বাড়ি উচ্চশিক্ষা আমাদের উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যর্থতা

আমাদের উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যর্থতা

‘হোয়াই’ ডু ইউ ডু এন্ড ক্যাচ টুয়েন্টি টু

বিজনেস এবং মার্কেটিং শিক্ষায় ‘দি হোয়াই কোয়েশ্চেন’ নিয়ে এখন অনেক আলোচনা হচ্ছে। যদিও বিহেভিয়েরাল ইকনিমিক্স এবং নতুন প্রজন্মের ইমোশোনাল বাইয়িং পুরো বিষয়টাকে ঘোলাটে করে ফেলেছে। তবুও ‘হোয়াই কোয়েশ্চেন’, অর্থাৎ ‘কেন’ ক্রেতা আপনার প্রোডাক্টটি কিনবে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা অতি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পণ্য যতো ভালো মানেরই হোক বা যতো কম দামেরই হোক না কেন, সেটি মানুষ কোনার জন্য ঝাঁপিয়ে নাও পড়তে পারে। ‘কেন’ ক্রেতা আপনার প্রোডাক্টটি কিনবে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা তাই ব্যবসায় সফল হতে গেলে অতি গুরুত্বপূর্ণ।

কেন মানুষ উচ্চশিক্ষিত হতে চায় এই প্রশ্নটিও উচ্চশিক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিখ্যাত মনোবিদ গুস্তভ ইয়ুং বলেছেন, আমাদের মধ্যে কোথাও একটা চিরন্তন ও সামগ্রিক (eternal and universal) বিচারবোধ কাজ করে। বৈদিক যুগের পণ্ডিতেরা আবিষ্কার করেছিলেন যে, প্রতিটি মানুষের মধ্যে একটি চিরন্তন ও সামগ্রিক ন্যায্যতার (ন্যায় বিচারের) বোধ বাস করে। এটি তাদের অবাক করেছিলো, কারণ এটি তো ঐশ্বরিক গুণ। এই কারণেই তাঁরা এই তত্ত্ব দিয়েছিলেন যে ঈশ্বর সর্বব্যাপী, সবার মধ্যে বিদ্যমান কারণ এই ন্যায্যতা তো ঈশ্বর ছাড়া হতে পারে না।

মনোবিদ এরিখ ফ্রম, পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান, জোতির্বিদ কাল সেগান – যাঁরা নিজেদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার বাইরেও উচ্চশিক্ষাটা তাঁরা কীভাবে পেয়েছেন অর্থাৎ কী তাঁদের অনুপ্রাণিত করেছে, সেটি নিয়ে বিস্তর কথা বলেছেন। তাঁরা প্রায় সবাই বলেছেন সেই ‘হোয়াই’ কোয়েশ্চেন বা ‘কেন’ প্রশ্ন উচ্চশিক্ষার মূল কেন্দ্র। তাঁরা বলেছেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে একটি চিরন্তন ও সামগ্রিক (eternal and universal) ‘কেন’ প্রশ্ন বাস করে।

বিশেষ করে ফাইনম্যান দেখিয়েছেন পদার্থ বিজ্ঞানের একই সমস্যা সবাই একইভাবে দেখে না। একই সমস্যা নিয়ে সবাই এক পথে চিন্তা করে না। তিনি জোর দিয়েছেন উচ্চশিক্ষার বিষয়ে ‘কেন’ প্রশ্নটি শিক্ষার্থীর নিজের অন্তরের প্রশ্ন বা তার ইনার কোয়েস্ট না হলে হয় না। বহু মনোবিদ এবং শিক্ষাবিদ দাবি করেছেন যে, এই অন্তরের প্রশ্ন বা তার ইনার কোয়েস্ট সব শিশুদের মধ্যে বিদ্যমান, বড় হলে বিরূপ পরিবেশ ও পরিস্থিতি একে নষ্ট করে দেয়।

যাদের এই অন্তরের প্রশ্ন বা তার ইনার কোয়েস্ট নষ্ট হয়ে গেছে, তারা আবার সামাজিক সুনাম, পরিচয় অথবা অর্থলাভের উপায় হিসাবে উচ্চশিক্ষাকে বেছে নিতে পারে। তারা তাদের একাগ্র ও নিরলস শ্রমের মাধ্যমে সত্যিকারের ইনার কোয়েস্ট যাদের আছে তাদের স্থানচ্যুত করতে পারে। তাহলে মানুষের মনে কি এমন ঘটে যে ন্যায্যতা ও ইনার কোয়েস্ট এই দুটি চিরন্তন ও সামগ্রিক মানব ধর্ম থেকে তারা বিচ্যুত হয়? এটি বুঝতে একটি উদাহরণের সাহায্য নেওয়া যাক।

আমার প্রিয় দুজন অভিনেতা রবার্ট ডে-নিরো এবং আল প্যাচিনো। তাঁদের দুজনের একত্রে অভিনীত একটি ছবি হিট (১৯৯৫)। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পরে এটি সাধারণ একটা হলিউড পুলিশ মুভি। কিন্তু এই মুভি একটি অসাধারণ সত্য আমাদের সামনে তুলে ধরে যে আপাত দৃষ্টিতে যাদের পরস্পরবিরোধী বিপরীত মেরুর সত্তা মনে হয় যেমন পুলিশ-চোর, সাধু-পাপী, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ভালো-মন্দ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত ইত্যাদি, ভিন্ন আলোকে তারা আসলে একই মেরুর হতে পারে।

ছবির কাহিনীতে লস অ্যাঞ্জেলিসে বাস করা নিল ম্যাককালী (রবার্ট ডে-নিরো) একজন পেশাদার ডাকাত, যে তার দলসহ একটি আর্মার্ড ভ্যান ডাকাতি করে কিছু মুল্যবান বন্ড হস্তগত করে। এটি করতে গিয়ে তার একজন অনুচর একজন গার্ডকে অনেকটা অযথাই গুলি করে হত্যা করে। সাক্ষী যাতে না থাকে সেই কারণে তারা শেষ পর্যন্ত সব গার্ডকেই হত্যা করে। ম্যাককালী প্রথম গার্ডকে হত্যাকারী তার দলের সদস্য মাথা গরম ওয়েইনগ্রোকে তার বুদ্ধিহীনতার জন্য তিরষ্কার করে ও প্রহার করে। এতে ওয়েইনগ্রো দলত্যাগ করে পালিয়ে যায়।

পুলিশের তরফ থেকে কেসটা হাতে নেয় এলএপিডি পুলিশ কর্মকর্তা ভিনসেন্ট হানা এবং তার দল। তাঁরা পরবর্তীতে একটি কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পুলিশ ওয়েইনগ্রোকে সনাক্ত করে। এবং সেটি তদন্ত করতে গিয়ে ট্রেস করতে পারে নিল ম্যাককালী ও তার দলকে। হানা এবং তার দল ম্যাককালী ও তার দলকে অনুসরণ করতে থাকে। একটি ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা অফিসার হানার দল জেনে ফেলে। কিন্তু হানার দলের একজনের সামান্য ভুলে ম্যাককালী বুঝে ফেলে যে, পুলিশ তাদের অনুসরণ করছে। তারা ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা ত্যাগ করে খালি হাতে পরিষ্কার অবস্থায় বের হয়ে আসে।

হানা বুঝতে পারে ম্যাককালী তার মতোই তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এবং একইভাবে চিন্তা করে। হানা সিদ্ধান্ত নেয় ম্যাককালীর সাথে দেখা করার। তাঁরা একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করে। কথাবার্তায় তাদের একে অপরের প্রতি বন্ধুত্ব ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায়। তাঁরা উভয়েই বোঝে তাঁরা কতো ডিটারমাইন্ড, ফোকাসড এবং কমিটেড নিজেদের কাজে। কথায় কথায় তাঁরা এও বলে, বন্ধুত্ব ও শ্রদ্ধার অনুভব থাকা স্বত্বেও যদি কখনও তারা পেশাগতভাবে মুখোমুখি হয়, তাহলে কেউ এক মুহূর্তও দ্বিধা করবে না একে অপরের প্রতি গুলি চালাতে। 

কথায় কথায় হানা শেয়ার করে ব্যক্তিগত জীবন। পারিবারিকভাবে হানা বিবাহিত এবং এটা হানার তৃতীয় বিয়ে যেটা ভেঙে যাবার পথে। তাঁর স্ত্রীর মেয়ে সে মানসিকভাবে সুস্থ নয়। তাঁর স্ত্রী তাঁকে চায় কিন্তু তাঁর আসল স্ত্রী হলো তাঁর কাজ। এই কারণেই তাঁর ঘর ভেঙে যায়।

ম্যাককালী বলে, তাঁর একটি প্রেমিকা আছে। সরল মনের মিষ্টি মেয়েটা একজন আর্টিস্ট। মেয়েটি তাঁর আসল পরিচয় জানে না, ম্যাককালী মিথ্যা করে তাকে বলে সে একজন সেলসম্যান। ম্যাককালী এও বলে যদিও মেয়েটা তাকে নতুন জীবন দিয়েছে, কিন্তু কখনও যদি সে অনুভব করে যে তাঁর জন্য পরিস্থিতি খারাপ, তাহলে ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে সে সব কিছু ত্যাগ করতে পারে, এটাই তার জীবনের মন্ত্র।

যদিও সিনেমাটিতে হানা একজন সৎ ও দক্ষ আইনসিদ্ধ পুলিশ কর্মকর্তা এবং ম্যাককালী একজন ডাকাত, অপরাধী, আইন অমান্যকারী, কিন্তু তাদের ব্যক্তিচরিত্র, কর্মপদ্ধতি এবং অন্তস্থলের প্রেষণা বা ইনার ড্রাইভ একই।

সেটি এক হলে তা কি? এলএপিডি পুলিশ কর্মকর্তা ভিনসেন্ট হানা তার তৃতীয় স্ত্রীর কন্যার আত্মহত্যার চেষ্টায় তাকে হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে নিয়ে গেলে তার স্ত্রী তার প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে যখন তাদের দাম্পত্যকে আবার গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয়, তখন হানা তার স্ত্রীকে নিজেই বলে “আমার অস্তিত্ব হল আমি যেটির পেছনে ছুটছি সেটা (All I am is what I am going after)”। ম্যাককালীর অস্তিত্বও কিন্তু তাই।

এখানে একজন আইনসিদ্ধ পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন আইন অমান্যকারী ডাকাত, খুনী হলেও দুজনেরই ব্যক্তি হিসাবে, মানুষ হিসাবে চেতনাগতভাবে অস্তিত্বহীন। তারা উভয়েই অস্তিত্বগতভাবে এক। তাঁরা উভয়েই যেটির পেছনে ছুটছে তাঁরা তাই। সেই কারণে তাঁদের কারুর মধ্যেই বেদ-উপনিষদে বর্ণিত যে চিরন্তন ও সামগ্রিক ঈশ্বরের অবস্থান থাকার কথা সেটি নেই, কার্ল ইয়ুং-এর চিরন্তন ও সামগ্রিক বিচারবোধ নেই এবং ফ্রম, ফাইনম্যান, সেগানের যে ইনার কোয়েস্ট সেটিও নেই।

এখন কোনো ব্যক্তি যদি পুলিশি বা ডাকাতিকে লক্ষ্যে পরিণত না করে ভালো নম্বর পাওয়াকে জীবনের লক্ষ্য করে? পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, দর্শন তথা ইত্যাদি বিষয়ে উচ্চশিক্ষাকে জীবনের লক্ষ্য করে যাদের অস্তিত্ব হলো, তারা যেটির পেছনে ছুটছে তারা সেটি (All they are what they are going after)। তখন তাঁরা তাঁদের কাজে অনেক দক্ষ হবে কিন্তু তাঁদের মধ্যে চিরন্তন ও সামগ্রিক বিচারবোধ এবং ইনার কোয়েস্ট থাকবে না। তখন তাঁরা অন্যের কাজের চমৎকার সহযোগী হবে কিন্তু তাঁর নিজের কোনো অন্তরের দিকনির্দেশনা থাকবে না। পরিশেষে অর্থ উপার্জন আর পদ অধিকার আর জনতুষ্টিই হবে তার লক্ষ্য।

সারাজীবন পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো নম্বর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান হয়েও তার গভীর প্রেরণা হবে অর্থ, ক্ষমতা অথবা জনপ্রিয়তা। সেই দিক থেকে তার মতো অস্তিত্বহীন একজন ব্যবসায়ী, একজন রাজনীতিবিদের সাথে কোনো তফাৎ নেই। প্রত্যেকেই তারা যেটির পেছনে ছুটছে তারা সেটায় পরিণত হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, অন্য দেশে, নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কি এমন অস্তিত্বহীন মানুষেরা নেই? অবশ্যই আছে, তবে তাঁরা সেগুলোর নিয়ন্ত্রণে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি অস্তিত্বহীনতার সংস্কৃতিতে পরিণত হয়ে যায়নি। সেইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি অস্তিত্বহীনদের দ্বারা ছিনতাই হয়ে যায়নি।

বড় ধরনের রাজনৈতিক ঘটনা শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে শূন্যতার সৃষ্টি করে। সেই শূন্যতা একটি সীমান্তিক মান অতিক্রম করলে পুরো প্রতিষ্ঠানের প্রথা ও সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশে ১৯৪৭-এর দেশ ভাগ আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে একটি বিশাল শূন্যতা ও বিচ্ছিন্নতার সৃষ্টি করেছে। ১৯৫৬ থেকে ১৯৭০-এর সামরিক সংস্কৃতি সেই শূণ্যতাকে বিপথে নিয়েছে। বিচারবোধ এবং ইনার কোয়েস্ট প্রতিস্থাপিত হয়েছে ইসলামি শরিয়াহ ও সামরিকতা দিয়ে।

১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ দিয়েছে আর এক ধাক্কা। এক বিদ্ধংসী যুদ্ধের সময় বিশাল সংখ্যক অমুসলিমদের হত্যা ও দেশত্যাগ, বুদ্ধিজীবি নিধন এবং মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই আবার ইসলামি সামরিক সংস্কৃতিতে সম্পূর্ণ সমর্পণ অস্তিত্বহীনতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে।

১৯৯০-এর পর থেকে গায়ের ঘাম বিক্রি করা অর্থনৈতিক উন্নয়ন সেই অস্তিত্বহীনদের করেছে অর্থ প্রতিপত্তিলোভে কলুষিত। প্রচণ্ড প্রতিযোগিতা শিক্ষায়তনগুলোকে বিচারবোধ এবং ইনার কোয়েস্ট যাদের আছে তাদের জন্য করেছে অপ্রবেশ্য। এর ফলে তৈরি হয়েছে একটি ক্যাচ টুয়েন্টি টু সিচ্যুয়েশন।

ক্যাচ টুয়েন্টি টু সিচ্যুয়েশন হলো একটি উভয় সংকট পরিস্থিতি। জোসেফ হেলার তার ১৯৬১ সালের উপন্যাস ক্যাচ-২২-তে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন বিমানবাহিনীর বৈমানিকদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সব মিশনে যেতে বাধ্য করা হয়। তখন বৈমানিকেরা সেই ঝুঁকি এড়াতে নিজেরা মানসিকভাবে সুস্থ নয় এমন আবেদন করা শুরু করে। সামরিক মনোবিশারদ তখন সেই আবেদনগুলোতে সম্মতি দিতে অস্বীকার করে। সে বলে যুদ্ধটাই মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ। যারা সেটাতে অংশগ্রহণ করতে চাইছে না তারা বরং সুস্থ।

এমনই একটি পরিস্থিতি আন্তন চেখভের একটি গল্পে আছে যে, এক ব্যক্তি মানসিক চিকিৎসকের কাছে গেছে সে যে মানসিকভাবে সুস্থ নয় তার জন্য একটি সার্টিফিকেট নিতে। সেটি একটি মেয়ের পিতাকে সে দেখাতে চায় তারা তাকে যেন তাকে আর মেয়েটির সাথে বিয়ের জন্য চাপাচাপি না করে। ডাক্তার সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করে কারণ সে বলে আপনি বরং মানসিকভাবে অন্যদের থেকে সুস্থ তাই আপনি মেয়েটিকে বিয়ে করতে চাইছে না।

এটি এমন পরিস্থিতিকে বর্ণনা করতে বোঝানো হয় যখন পরিস্থিতির বিকাশ পরিস্থিতিটির অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করে। যেমন দুর্নীতি বন্ধ করতে যদি নিয়ম করা হয় যে অভিজ্ঞতা ছাড়া কাউকে চাকুরিতে নিয়োগ প্রদান করা যাবে না, তাহলে চাকুরিতে কর্মীশূন্যতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। যেটি পরিশেষে দুর্নীতি যে ক্ষতি করত তার চেয়েও বেশি ক্ষতি করবে।  

আমাদের শিক্ষায়তনগুলোর বিপথ যাত্রা বহু মানুষকে আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে লাভবান করছে। তাই এই ক্যাচ টুয়েন্টি টু সিচ্যুয়েশন থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ নয়। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন অস্তিত্বহীনতার সংস্কৃতিতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত যেখানে বিচারবোধ এবং ইনার কোয়েস্ট যাদের আছে তারা যেন সেখানে টিকতে না পারে সেই চেষ্টা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করা হয়ে থাকে।

এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো বিকল্প প্রকৃতির শিক্ষায়তন চালু করা। অনেকটা প্রযুক্তি শিক্ষার জন্য ভারত যেমন আইআইটি চালু করেছিল তেমন। আমাদের এখানেও উচ্চশিক্ষার জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন সংস্কৃতির একটি ধারা তৈরি করতে হবে এবং সেটি যত দ্রুত সম্ভব। ভিন্ন সংস্কৃতির এই ধারা অন্যদের বাধ্য করবে নিজেদের শুদ্ধ করতে।

কোন মন্তব্য নেই

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version