সিদ্দিকী শিপলু লিখেছেন শিক্ষকদের নিজ বিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়ানোর
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সন্তানদেরকে তাদের নিজ বিদ্যালয়ে পড়ানোর বিষয়ে নির্দেশনা থেকে মনে হয় যে, সরকারি প্রাথমিকের মান নিম্নগামী হওয়ার মূল কারণ শুধু শিক্ষক। শিক্ষকরা তাদের সন্তানকে নিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালে বিদ্যালয়ে পড়ালেখার মান বৃদ্ধি পেয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আসলেই কি তাই? আমার মতে সরকারি প্রাথমিকের মান নিম্নে থাকার পেছনের কারণগুলো নিম্নরূপ:
ক) শ্রেণিকক্ষে মাত্রাতিরিক্ত (নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযোগী শিক্ষার্থী সংখ্যার তুলনায় বেশি) শিক্ষার্থী;
খ) অবকাঠামোগত দুর্বলতা(বিদ্যালয় ভবন, শৌচাগার ইত্যাদি);
গ) শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমের বাইরে অন্য সরকারি কাজ শিক্ষকদের ওপর চাপিয়ে দেয়া;
ঘ) শিক্ষকদের কম বেতন।
আমি একবার একটি প্রকল্পের অধীনে সিলেটের এক প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি জানালেন, শিক্ষকতার প্রথম দিকে তিনি কয়েকবার জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হয়েছিলেন। তাঁর বিদ্যালয় থেকে প্রতি বছরই ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেতো শিক্ষার্থীরা৷
তো আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এখন পারেন না কেন?
যদি আমার বেতন আরও বেশি থাকতো, তাহলে আমি একটা ফ্রিজ কিনতে পারতাম, সপ্তাহের বাজার একদিন করে রাখতে পারতাম। আমার বেতন আরও বেশি থাকলে অতিরিক্ত আয় নিয়ে আমাকে চিন্তা করতে হতো না। তখন আমার সময় বেঁচে যেতো, সেই সময়টা আমি বিদ্যালয়ের পাঠদানের মানোন্নয়ন নিয়ে আরও চিন্তা করতে পারতাম। রাষ্ট্র আমার পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটানোর দায়িত্ব নিক, আমি সুশিক্ষায় শিক্ষিত জনবল গঠনের দায়িত্ব নিবো।
উত্তরে বললেন, “তখন আমি অবিবাহিত ছিলাম। দায়িত্ব কম ছিলো। সম্পূর্ণ মনযোগ আমি বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের ওপর দিতে পারতাম। বিদ্যালয়ের সময়ের পরও আমি ভাবতাম কীভাবে বিদ্যালয়ের ভালো করা যায়, কীভাবে শিক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্ট করানো যায়। আমি বিদ্যালয়ের সময়ের বাইরেও শিক্ষার্থীদের ভালোমন্দের বিষয়ে খোঁজ খবর করতাম। কিন্তু এখন আমার পরিবার বড় হয়েছে, সন্তান আছে। যদিও এগুলো বিদ্যালয়ের মান নিম্নগামী হওয়ার জন্য মূল কারণ না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে— পরিবারের সদস্যদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর চিন্তা। রাষ্ট্র আমাকে যে বেতন দেয় সেই বেতন দিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটানো বা তাদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব না। তাই বিদ্যালয় ছুটির পর আমাকে অতিরিক্ত উপার্জনের বিষয় নিয়ে ভাবতে হয়। প্রতিদিন বাজারে যেতে হয়, পরিবারের ছোটখাটো কাজগুলোও আমাকেই করতে হয়। যদি আমার বেতন আরও বেশি থাকতো, তাহলে আমি একটা ফ্রিজ কিনতে পারতাম, সপ্তাহের বাজার একদিন করে রাখতে পারতাম। আমার বেতন আরও বেশি থাকলে অতিরিক্ত আয় নিয়ে আমাকে চিন্তা করতে হতো না। তখন আমার সময় বেঁচে যেতো, সেই সময়টা আমি বিদ্যালয়ের পাঠদানের মানোন্নয়ন নিয়ে আরও চিন্তা করতে পারতাম। রাষ্ট্র আমার পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটানোর দায়িত্ব নিক, আমি সুশিক্ষায় শিক্ষিত জনবল গঠনের দায়িত্ব নিবো।”
উপরে বর্ণনা করা অল্প কয়েকটি সমস্যার সমাধান করা শিক্ষকদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। সেক্ষেত্রে নিজ সন্তানকে নিজ বিদ্যালয়ে ভর্তি করালেই যে শিক্ষার মান বেড়ে যাবে এটি ভাবা ভুল বলেই মনে হয়।
বস্তুত প্রাথমিকের শিক্ষকদেরকে নিজ সন্তানকে নিজ বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে বাধ্য করাটা মূলত শিক্ষার নিম্নমানের জন্য সরাসরি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাঠদানকেই দায়ি করা বোঝায়। এটি ঠিক না। নিজ বিদ্যালয়ে নিজ সন্তান পড়ানোর বাধ্যবাধকতা দেয়ার আগে কিছু বিষয় নজরে রাখা দরকার।
শিক্ষার্থীর বাসস্থান থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব
একবার একটি বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সময়টি ছিলো বর্ষাকাল। বৃষ্টির পানির তোড়ে বিদ্যালয়ে আসার রাস্তাটির একটি অংশ ভেসে গিয়েছিলো। আমি ও অপর পরিদর্শক মূল রাস্তা থেকে ধানক্ষেতে নেমে হাঁটুপানি মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি কোনো শিক্ষক নেই। যাদের কয়েকজনের বাসা বিদ্যালয়ের কাছে, তারাও আসেননি। এটি তাদের গাফলতি। কিন্তু দু’জন শিক্ষিকা আসতে পারেনি বিদ্যালয়ে আসার রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে। তারা শহরে থাকেন, স্বাভাবিকভাবে তাদের সন্তানরাও শহরের কোনো বিদ্যালয়ে পড়ে, যেটি বাসা থেকে কাছে। যেখানে পিতা-মাতার পক্ষেই বিদ্যালয়ে যাওয়া সময়ে সময়ে অসম্ভব, সেখানে শিক্ষার্থীর পক্ষে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব কী করে?
বস্তুত শিক্ষকের সন্তান হোক বা অন্য কারো, বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বাসস্থান থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্বটাই মূখ্য হওয়া উচিৎ, পিতামাতার চাকুরিস্থল নয়। শিক্ষার মানোন্নয়নের নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে গিনিপিগ বানানোর কোনো মানে হয় না।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পোস্টিং
প্রাথমিক স্তরে কর্মরত বেশিরভাগই শিক্ষিকা। আর তাদের বেশিরভাগ পরিবারেই তারা দ্বিতীয় উপার্জনকারী এবং স্বামী প্রথম ও প্রধান উপার্জনকারী। সাধারণত স্বামীর উপার্জনস্থলেই সন্তানরা থাকে। আর শিক্ষিকাদের পোস্টিঙের ক্ষেত্রে সকল স্তরে তাদের আবাসস্থলকে বিবেচনা করা হয় না। আমি অন্তত দু’জন শিক্ষিকাকে চিনি যারা তাদের পরিবার থেকে দূরে থেকে শিক্ষকতা করছেন। সন্তানদেরকে ঢাকায় রেখে ভালো পড়ালেখার সুযোগ দেয়ার জন্য সারাজীবন পরিবার থেকে বহুদূরে থেকে চাকরি করছেন।
অপেক্ষাকৃত উন্নতমানের বিদ্যালয়ে নিজ সন্তানকে পড়ানোর অধিকার সব পিতামাতারই থাকা উচিত, তা সে শিক্ষকই হোন বা ডাক্তার। সরকারি বিদ্যালয়ের সব সমস্যা দূর করে যদি সেগুলো ভালো বিদ্যালয়ে পরিণত হয়, তাহলে এরকম আদেশ জারির দরকার নেই। তখন এমনিতেই সবাই ভালো সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চাইবে।
আবার গতকালই আমার এক বন্ধুর বড়বোনের কথা জানলাম, যিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন, চাকরির শেষ বছরে তাকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে উত্তরবঙ্গে পোস্টিং দেয়া হয়েছিল। কারণ জানা নেই। ধারণা করা হয়, বিশেষ কাউকে ঢাকায় আনার জন্য তাকে বদলি করা হয়েছিল দূরে। শেষে অনেক কষ্টে নিজ পূর্বপুরুষের বাড়ি নরসিংদী থেকে অবসরে যেতে পেরেছিলেন; যদিও তার বাড়িঘর, সন্তান-সন্ততি সব ঢাকার যাত্রাবড়িতে। তার চাকরিজীবনে তাকে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছিলো।
আমি আসলে বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকদের পোস্টিঙের বিপক্ষে নই, কিন্তু তার সন্তানকে তারই স্কুলে পড়তে হবে এমন নির্দেশনার পূর্বে এই সমস্যার সমাধান জরুরি।
ভর্তি করানোর অধিকার পিতামাতার কাছেই থাকা উচিত
অপেক্ষাকৃত উন্নতমানের বিদ্যালয়ে নিজ সন্তানকে পড়ানোর অধিকার সব পিতামাতারই থাকা উচিত, তা সে শিক্ষকই হোন বা ডাক্তার। সরকারি বিদ্যালয়ের সব সমস্যা দূর করে যদি সেগুলো ভালো বিদ্যালয়ে পরিণত হয়, তাহলে এরকম আদেশ জারির দরকার নেই। তখন এমনিতেই সবাই ভালো সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চাইবে। এ-বিষয়ে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদাহরণ উল্লেখযোগ্য। প্রাথমিকের অন্য সমস্যা থেকে চোখ সরিয়ে শিক্ষকদের পাঠদানকে মূল দোষী সব্যস্ত করে তাদের সন্তানকে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করে মানোন্নয়ন সম্ভব নয় বলেই মনে হয়।
শিক্ষক-শিক্ষিকার সন্তানকে বিশেষ সুবিধা প্রদান
আমার ছাত্রজীবনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সন্তানকে নিজ বিদ্যালয়ে পড়াতে দেখেছি অনেক। আমার ক্লাসমেটও ছিলো এমন। একজনকে দেখেছি, যোগ্যতা না থাকার পরও সে ক্লাসে সবসময় এক রোলের অধিকারী। সব শিক্ষকের বিশেষ নজরদারিতে থাকে তারা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকার সন্তান নিজ বিদ্যালয়ে পড়ানো মানে এটি না যে পুরো শ্রেণির শিক্ষন-শিখন কার্যক্রমের কোনো উন্নয়ন সাধন হতো, তবে উক্ত শিক্ষার্থীর উন্নতি হতোই। ডায়েরিতে তার পড়া লিখে দেয়া, ভালো করে পড়া বুঝিয়ে দেয়া, বিশেষ আদর পাওয়া, পরীক্ষার খাতা দেখার সময় বিশেষ যত্ন নেয়া, এমনকি পরীক্ষার হলেও বিশেষ সহায়তা পাওয়া একটি নৈমত্তিক এবং সাধারণ ব্যাপার ছিলো। এর ফলে কিন্তু শিক্ষার মান বাড়েনি। সবাই একরকম নয় এটিও জানি। আমার এক বন্ধু তার মায়ের বিদ্যালয়ে ক্লাস ওয়ান থেকে এসএসসি পর্যন্ত থাকার পরও পরীক্ষা ও পরীক্ষার খাতা দেখায় কোনো বিশেষ সুবিধা পায়নি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষ সুবিধা দেয়ার মতো দুর্নীতি দেখেছি। এটা দুর্নীতিই।
উপরের লেখাগুলোর মানে এই নয় যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিজ সন্তানদের পড়ানোর সিদ্ধান্তটি পুরোটিই অযৌক্তিক। বরং কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় আমার পছন্দ না। এর মূল কারণগুলো হচ্ছে: ক. শিশুদের ওপর পড়ার অতিরিক্ত চাপ, খ. সিলেবাস-বহির্ভূত বই, গ. অতিরিক্ত ইংরেজি পড়ানো ইত্যাদি।
বিভিন্ন উচ্চ-বিদ্যালয়ে ইংরেজি মিডিয়াম, বাংলা মিডিয়াম নামে প্রাথমিক স্তর পরিচালনা করে, সেখানেও সিলেবাস-বহির্ভুত বই পড়ানো হয়। এটি একটি বড় সমস্যা।
এবার আসুন চিন্তা করে দেখি যে, আমাদের দায়িত্ব কোন স্তরের বা কোন ধরনের বিদ্যালয়গুলোর ওপর থাকা উচিত। আসলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আমাদের মূল বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত নয়; বরং প্রাথমিক স্তরের শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রম পরিচালনাকারী সকল কিন্ডারগার্টেন, বেসরকারি প্রাথমিক, সরকারি প্রাথমিক, আরবি মাধ্যম ইত্যাদি সকল ধরনের বিদ্যালয় এবং তার শিক্ষার্থীরাই আমাদের বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যা দূর করার সাথে সাথে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত বই চাপিয়ে দেয়া, অতিরিক্ত ইংরেজি পড়ানোর মাধ্যমে অতিরিক্ত চাপ দেয়া বন্ধ করা উচিত।
কিন্ডারগার্টেনে না পড়িয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজ বিদ্যালয়ে পড়ানোর বাধ্যবাধকতা আসলে কিন্ডারগার্টেনগুলোকে সম্মানিত করেছে। এই সিদ্ধান্তে পরোক্ষভাবে তাদেরকে ভালো বলা হয়েছে। অতিরিক্ত বই, অতিরিক্ত সিলেবাস এবং অতিরিক্ত চাপের কথা বাদ দিলে আসলেও কিন্তু ভালো পড়ায় তারা। তাই না?
ক্লাসরুমে নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী, বিশেষ যত্ন, স্নেহ-মমতা প্রদান ইত্যাদি বিশেষ কার্যক্রম তাদের অবস্থানকে উপরে উঠিয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, প্রাথমিক স্তর ছাড়াও একই রকম সমস্যা মাধ্যমিক স্তরেও রয়েছে।
শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শত শত কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হয়। উদাহরণ হিসেবে মাধ্যমিক স্তরের একটি প্রকল্প ‘সেসিপ’-এর কথা উল্লেখ করা যায়। প্রকল্পগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে তারপর চাকুরিতে নিয়োজিত করানো হয়, কিন্তু ৪/৫ বছর পর সেগুলো আর চলমান থাকে না। কর্মকর্তারা চাকরি হারায়। তাদের তখন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়। পরে আবার একই কাজের ওপর শত শত কোটি টাকার নতুন প্রকল্প শুরু হয়। আবার নিয়োগ হয়, সাথে সাথে শিক্ষার মানোন্নয়েনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের অনিশ্চিত চাকরিজীবনেরও শুরু হয়। আর সুযোগ পেলেই দক্ষ শিক্ষাকর্মীরা অনিশ্চিত চাকরীজীবনের সমাপ্তি ঘটিয়ে অপেক্ষাকৃত নিশ্চিত চাকরির দিকে চলে যায়। যেখানে মানোন্নয়নের জন্য নিয়োজিতরা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, সেখানে যথাযথ মানোন্নয়ন কিভাবে আশা করা যায়?
আবার কিছুদিন আগে খবরে পড়লাম যে, শিক্ষার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত শত শত কোটি টাকা দিয়ে বিদ্যালয়গুলোতে লিফট লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এর মানে কী দাঁড়ালো? শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য হাজার কোটি টাকাও ব্যয় হয়, কিন্তু মানোন্নয়ন হয় না। শত-সহস্র কোটি টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে উন্নয়ন নিশ্চিত হতো। শেষে শিক্ষকদের বাধ্য করা হচ্ছে তাদের সন্তানকে নিজ বিদ্যালয়ে পড়ানোর।
আমি আসলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে নিজ বিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়ানোর আদেশের বিরোধিতাকারী নই। তবে এরকম আদেশের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান হাজার সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে শুধু শিক্ষকদের পাঠদান প্রক্রিয়াকে দোষারোপ করার বিরোধী, যেখানে শিক্ষাক্ষেত্রের অনেক সমস্যার সমাধান করার এখতিয়ারই তাদের নেই।
সিদ্দিকী শিপলু: লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)-এর সাবেক শিক্ষার্থী।
লেখক পরিচিতি
সম্পাদক বাংলাদেশের শিক্ষা
এই লেখাটি সম্পাদক কর্তৃক প্রকাশিত। মূল লেখার পরিচিত লেখার নিচে দেওয়া হয়েছে।