বাড়ি শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা

প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ১০০% করার টেকনিক: একজন শিক্ষকের অভিজ্ঞতা

শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি

কামাল উদ্দিন লিখেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিয়ে

এই টেকনিক প্রয়োগ করে আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ১০০% করেছি। আপনারা ও প্রয়োগ করতে পারেন। টেকনিকটি নিচে দেওয়া হলো—

১। বিদ্যালয় ক্যাচমেন্ট এলাকার পাড়াগুলোর তালিকা করুন।

২। প্রতিটি শ্রেণিতে কোন পাড়ায় কতজন শিক্ষার্থী আছে তার একটি তালিকা করুন।

৩। একেক পাড়ার শিক্ষার্থীদের সংখ্যা একেক রকম। সেক্ষেত্রে পাশাপাশি অবস্থিত একাধিক পাড়ার শিক্ষার্থীদের একটি দলে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

৪। ক্যাচমেন্ট এলাকার বাইরের শিক্ষার্থীদেরকে, যে পাড়ার শিক্ষার্থী সংখ্যা কম আছে সে রকম একটি পাড়ার দলের সাথে সংযুক্ত করা যেতে পারে।

৫। প্রতি দলে পাড়ার তিন প্রান্ত থেকে তিন জন শিক্ষার্থী বাছাই করুন। বাছাইকৃত তিন জন শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এক জন দলনেতা নির্বাচন করুন। অপর দুই জন সহকারি দলনেতা।

৬। নির্বাচিত এই তিন জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন তাদের পাড়ার তাদের ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসবে। ধরা যাক, তাদের পাড়ায় তাদের ক্লাসে ১২ জন শিক্ষার্থী আছে। একেক জনের দায়িত্বে চার জন শিক্ষার্থী।

৭। নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে এমন শিক্ষার্থীদের দলনেতা নির্বাচন করতে হবে।

এই টেকনিকের সুবিধাসমূহ:

১। উপস্থিতি ১০০% হবে।

২। শ্রেণি শিক্ষককে হাজিরা ডাকতে হয় না ।

৩। সময় বাঁচানো করা যায়: কোনো শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে সে পাড়ার দলনেতা দাঁড়িয়ে শ্রেণি শিক্ষককে অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখা করবে। শ্রেণি শিক্ষক অনুপস্থিত ওই ছাত্রকে মার্কিং করে অবশিষ্ট শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দিয়ে হাজিরা ডাকার জন্য বরাদ্ধকৃত সময় থেকে সময় বাঁচানো যায়। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির তদারকির কাজ শ্রেণি শিক্ষক আগে একা করতেন। এ টেকনিক প্রয়োগ করলে তাঁকে দলনেতাগণ সহযোগিতা করে বলে তাঁর অনেক সময় ও ঝামেলা বাঁচে।

৪। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের মানসিকতা গড়ে উঠে।

৫। দলনেতারা অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের বাড়ি গমনের কারণে অভিভাবকদের শিক্ষা ও বিদ্যালয়ের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়।

৬। ঝরে পড়ার হার হ্রাস ও শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন:  ঝরে পড়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিদ্যালয়ে অনিয়মিত উপস্থিতি। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারলে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন হয় ও ঝরে পড়ার হার হ্রাস পায়।

কামাল উদ্দিন: প্রধান শিক্ষক, রুমকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উখিয়া কক্সবাজার।

কোন মন্তব্য নেই

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version